শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
এ কে আজাদ, ব্যুরো প্রধান, বর্তমানকন্ঠ ডটকম, চাঁদপুর : মহামারী (কোভিড-১৯) করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশে লকডাউন থাকার পর রোববার (৩১ মে) থেকে সরকারের নির্দেশনায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে চাঁদপুরের সাথে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার নৌ-পথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় এমভি সোনার তরী লঞ্চ চাঁদপুর নৌ-টার্মিনাল থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তবে শুরুর দিন থেকেই সরকারি যে নিয়ম-নীতি ও স্বাস্থ্য বিধি রয়েছে তা মানছে না লঞ্চগুলো। এদিকে দ্বায়িত্ব অবহেলার কারনে চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা আরব্দুর রাজ্জাককে বরখাস্ত করা হয়েছে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে ব্যর্থতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বলে সূত্র থেকে যানা যায়।
অপর দিকে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে এমভি রফরফ লঞ্চ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যাত্রীদের লঞ্চে উঠানো এবং বাড়তি টিকেট বিক্রি করে। এ জন্য লঞ্চটির ৩জন স্টাফকে আটক করে পুলিশ। পরে সতর্ক করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউনের ফলে ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে চাঁদপুরের লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রোববার সরেজিমন লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নির্দেশ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা থাকলেও মানা হচ্ছেনা তা। বেশীর ভাগ যাত্রীর মুখেই ছিলনা মাস্ক। কোন প্রকার সামাজিক দূরত্ব অথবা শারিরিক দূরত্ব যেটাই বলিনা কেন তা মানার কোন বালাই ছিলনা। একে অন্যের গায়ের সাথে লেগেই চলাচল করছে। তাছাড়া লঞ্চকর্তৃপক্ষের নিকট থেকেও দেখা যায়নি বিশেষ কোন ব্যবস্থা। লঞ্চগুলোতে হ্যান্ড স্যানেটাইজারের ব্যবস্থা বা জীবানুনাসক দ্রব্য স্প্রে করতে দেখা যায়নি। অতীতের সময়ের মত তারা স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রী পরিবহন করছে। কোন ধরনের নিয়মনীতি না মেনেই যাত্রীরা লঞ্চে উঠছেন। বিশেষ করে আশপাশের চরাঞ্চল থেকে নৌকা বোঝাই করে যাত্রীদের লঞ্চঘাটে আসতে দেখা যায়।
লঞ্চযাত্রী মুক্তার হোসেন ও তারেক হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আজ থেকে সরকার বিষেশ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। অফিস আদালতও খুলেছে, আমাদের অফিসের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আমরা ঢাকায় যাচ্ছি। কিন্তু করোনা সংক্রমণরোধে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে তেমন কোন স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। অনেক যাত্রীর মুখে মাস্কও পড়া নেই। এভাবে ঢালাও ভাবে লঞ্চ চলাচল করতে থাকলে সংক্রমণ আরো বেড়ে যাওয়ার আসংঙ্কা থেকেই যায়।
চাঁদপুর জেলা বন্দর কর্মকর্তা আ. রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় পর আজ থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। ঘাটে চঞ্চের সংখ্যা কিছুটা কম থাকায় লঞ্চ ছাড়ার সময় সূচি সঠিকভাবে মানা যায়নি। তবে আগামীকাল থেকে লঞ্চের সূচি মেনে চলাচল করবে। যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, নিজেদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাতায়াত করার অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি লঞ্চগুলো যেন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি। কোন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চাঁদপুর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন নৌরুটে প্রায় অর্ধশত লঞ্চ চলাচল করে থাকে। নিরাপদ, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী হওয়ায় চাঁদপুর হয়ে আশপাশের অনেক মানুষ লঞ্চে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন।