শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১২ অপরাহ্ন

আট বছর কলেজে না থেকেও বেতন-ভাতা উত্তোলন

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৫৪ পাঠক
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১২ অপরাহ্ন

রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজের সহকারী অধ্যাপক তসলিমা খাতুন। বিগত আট বছর যাবৎ কলেজে কোনো ক্লাস নেন না তিনি। তবে থেমে নেই তার বেতন-ভাতা উত্তোলন। ক্লাস নেয়াসহ একাডেমিক কোনো কাজে অংশগ্রহণ না থাকলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে কলেজ থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলনসহ ভোগ করেন সকল সুযোগ-সুবিধা।

এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না। কারণ তিনি রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার স্ত্রী। একজন এমপির স্ত্রীর এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ রাজশাহীর সচেতন মহল।

তারা বলছেন, একজন এমপির স্ত্রীর কাছ থেকে এমন নীতি বহির্ভূত কাজ কাম্য নয়। কলেজে হাজির না হয়ে, ক্লাস না নিয়েই বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন, তা কতটা নৈতিক? একজন এমপির স্ত্রী হয়ে কীভাবে এটি করতে পারেন? দেখার কী কেউ নেই?

নাম প্রকাশ না করা শর্তে রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজের এক শিক্ষক জানান, দীর্ঘ আট বছর যাবৎ কোনো ক্লাস নেন না তসলিমা খাতুন। ক্লাস নেওয়ার জন্য তিনি মিমি নামের একজনকে ঠিক করে রেখেছেন। তসলিমার পরিবর্তে তার ক্লাসগুলো নেন মিমি। বিনিময়ে মিমিকে মাসে ৫/৬ হাজার টাকা দেন তসলিমা। তসলিমা এমপি স্ত্রী হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ভয়ে কিছু বলে না। এমপি স্ত্রী হওয়ার দাপটে বছরের পর বছর এভাবেই বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন তসলিমা খাতুন। এছাড়াও বেশ কিছুদিন আগে এমপি পত্নীর নিয়োগ বাণিজ্যের গুঞ্জন উঠেছিল।

বরেন্দ্র কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, তসলিমা খাতুন নামের আমাদের একজন ম্যাডাম আছে বলে জানি। তিনি এমপি বাদশার স্ত্রী। তাকে আমরা কখনো ক্লাস নিতে দেখিনি।

নাম প্রকাশ না করে রাজশাহীর একজন প্রবীন কলেজ শিক্ষক বলেন, কোনো শিক্ষক ছুটিতে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তার ক্লাস নেয়ার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে তাকে নিবন্ধিত শিক্ষক হতে হবে। কিন্তু নিজে অনুপস্থিত থেকে একজন অনিবন্ধিত শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেয়ানো নিয়মবহির্ভূত।

তিনি আরও বলেন, কলেজে হাজির না হয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন অবৈধ। এমপি স্ত্রী তসলিমার খাতুন যদি সেটি করে থাকেন তবে তার বিরুদ্ধেও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হলে এ সুযোগ আরও অনেকেই নেয়ার চেষ্টা করবে। এতে শিক্ষা ব্যবস্থা কুলষিত হবে বলেও মনে করেন এই প্রবীন শিক্ষক।

এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে অধ্যাপক তসলিমা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর মো. আব্দুল মালেক বলেন, সহকারী অধ্যাপক তাসলিমা খাতুন নিয়োমিত কলেজে আসতে পারেন না। সে কারণে একজনকে ঠিক করে দিয়েছেন তার ক্লাস নেয়ার জন্য। তবে মাঝে মধ্যে তিনি কলেজে আসলে নিজে ক্লাস নেন। তিনি ঢাকায় ব্যস্ত আছেন বলে এর বেশি আর কিছু বলতে চাননি তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *