শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ত,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: জহুরুল ইসলাম যখন ব্যাটিংয়ে নামলেন, ঢাকা ডায়নামাইটসের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ২৪। ১৭ রানের মধ্যে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বিদায় নিলে ঢাকার সামনে তখন পরাজয়ের চোখ রাঙানি। ম্যাচের রং বদলে গেল জহুরুল-কাইরন পোলার্ডের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে। খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ঢাকা পেল ৪ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়। যাঁরা অসাধারণ ফিনিশিংয়ে ম্যাচ জিতেছে, সেই জহুরুলের দাবি, তিনি নাকি দলকে বিপদেই ফেলে দিয়েছিলেন!
শেষ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ৬ রান। কার্লোস ব্রাফেটের পর পর দুটি ইয়র্কারে কোনো রান নিতে পারেননি জহুরুল। পরের দুই বলে হলো ২ রান। শেষ ২ বলে ঢাকার দরকার ৪ রান। দলকে জয় এনে দিতে স্বভাববিরুদ্ধ এক শট খেললেন জহুরুল, ফিল্ডারকে শর্ট থার্ডম্যানে দেখে ব্রাফেটকে রিভার্স স্কুপ খেলে থার্ডম্যান দিয়ে চার!
যদি বলটা ঠিকমতো না খেলতে পারতেন, দল হয়তো বিপদেই পড়ে যেত। বড় একটা ঝুঁকি নিয়েছেন ৪৫ রানে অপরাজিত থাকা জহুরুল। সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটা উঠতেই ঢাকার এই মিষ্টভাষী টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানের মুখে লাজুক হাসি, ‘প্রথম দুটি বল আমি স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে (ব্রাফেট) সাধারণত দ্রুত বোলিং করে। ইয়র্কারগুলোও অনেক নিখুঁত। চার মারার চিন্তা আমার ভুল ছিল। যদি ১ রানের চিন্তা করতাম, তাহলে বল ব্যাটে লাগত। ম্যাচটায় আমি দলকে বিপদেই ফেলে দিয়েছিলাম! পরে চিন্তা করেছি, যেহেতু দুটি বলে ইয়র্কার করে ও সফল হয়েছে, আবারও ইয়র্কার করবে। আমি তাই ভাবলাম, সে একই বল করবে। থার্ড ম্যান যেহেতু ওপরে উঠে এসেছে, সেদিক দিয়ে উল্টো স্কুপ করব। আগে এটা ম্যাচে কোনো দিন খেলিনি। অনুশীলনে চেষ্টা করি। ম্যাচে এটিই প্রথম।’
এবার বিপিএলে বিদেশিদের দাপটে স্থানীয় খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখা যাচ্ছে কম; যা একটু ভালো করছেন বোলাররা। ব্যাটসম্যানরা যেন পড়ে আছেন বিদেশিদের আড়ালে। মুমিনুল হকের পর ম্যাচের নায়ক হয়ে জহুরুল যেন এই ধারায় কিছুটা পরিবর্তন আনলেন। কেন স্থানীয় ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠতে পারছেন না, জহুরুল সেটির কিছু ব্যাখ্যা দিলেন, ‘আমাদের যে ব্যাটিং লাইনআপ, এখানে সুযোগ পাওয়া খুবই কঠিন। স্থানীয় খেলোয়াড়রা খুব একটা সুযোগই পাননি আগে। বিদেশিদের শক্তির জায়গা বেশি, টি-টোয়েন্টিতে ওরা খুবই ভালো খেলে। আজ বড় চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। আমি যখন নামলাম, ২৪ রানে ৪ উইকেট ছিল। আমাদের মতো ক্রিকেটারদের জন্য এটি একটি সুযোগ যে শেষ পর্যন্ত খেলা। আসল কাজ করে দিয়েছে যদিও পোলার্ড। তখন রানরেট (আস্কিং) সাড়ে ১৪। আমাদের জন্য কাজটি খুবই কঠিন। আমরা হয়তো হিসাব করে ৮-৯ করে করতে পারব। পোলার্ডের ইনিংসটাই আমাদের এত দূর নিয়ে এসেছে। পরে আমি আর সৈকত (মোসাদ্দেক) ঠিক করেছিলাম, শেষ পর্যন্ত যদি খেলতে পারি তাহলে জেতা সম্ভব।’