শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৪ অপরাহ্ন

খুলনাকে হারিয়ে প্লে’অফে মাশরাফির রংপুর

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩৬ পাঠক
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৪ অপরাহ্ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭: অনেকটা বাঁচা-মরার লড়াই ছিল রংপুর রাইডার্সের। আজ জিতলে প্লে’অফ, অন্যথায় অপেক্ষা করত হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। শেষ ম্যাচে আবার প্রতিপক্ষ ঢাকা ডায়নামাইটস।

হেভিওয়েট ঢাকা ডায়নামাইটস আগেই নিশ্চিত করে শেষ চার। শেষ ম্যাচে তাদের হারানোর কিছু নেই কিন্তু রংপুরকে হারালে প্রাপ্তির খাতায় যোগ হবে বড় অর্জন। শেষ ম্যাচ পর্যন্ত আর অপেক্ষা করল না মাশরাফির রংপুর। মিরপুরে খুলনাকে ১৯ রানে হারিয়ে নিশ্চিত করেছে প্লে’অফ।

১১তম ম্যাচে ষষ্ঠ জয় নিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে মাশরাফির রংপুর রাইডার্স। এ জয়ে সিলেট সিক্সার্সের শেষ চারের আশাও শেষ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৪৭ রান করে রংপুর। জবাবে পূর্ণ ২০ ওভার খেলে ৮ উইকেটে ১২৮ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা।

রংপুরকে আজ ম্যাচ জিতিয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন। ৩৫ বলে ৫০ করলেও শেষ ৫ বলে মিথুনের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান। সেটাও শেষ ওভারে। বলার অপেক্ষা রাখে না ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয় ইনিংসের শেষ ওভার। দিন শেষ ওই ১৯ রানের পার্থক্যই দুই দলের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দেয়।

টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই ভুগতে থাকে দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও জিয়াউর রহমান। ১৩তম বলে প্রথম বাউন্ডারি আসে জিয়াউর রহমানের ব্যাট থেকে। সেটাও ভাগ্যের জোরে। রাহীর বলে টপ এজ হয়ে উইকেটের পিছনে ৬ রান পান জিয়াউর। কিন্তু পরের বলেই আউট ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল স্লগ করতে গিয়ে ডিপ থার্ড ম্যানে দাঁড়ানো শফিউলের হাতে ক্যাচ দেন।

উইকেটে সেট হয়ে হাত খুলে খেলেন ক্রিস গেইল। চতুর্থ ওভারে আফিফকে দুটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে তুলেন ১৬ রান। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে ম্যাককালাম শফিউলের উপর তাণ্ডব চালানো শুরু করেন। প্রথম দুই বলে এক চার ও এক ছক্কায় তুলেন ১০ রান। তৃতীয় বলটিও মেরেছিলেন ম্যাককালাম। কিন্তু শফিউলের স্লোয়ারে ব্যাটে-বলে ঠিকমত হয়নি। মিড অনের থেকে দৌড়ে লং অনের কাছাকাছি গিয়ে বল তালুবন্দি করেন আরিফুল। পাওয়ার প্লে’র শেষ বলে গেইল ছক্কা হাঁকালে রংপুরের রান দাঁড়ায় ৬ ওভারে ৪৯।

তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিথুন ও গেইল ২৯ রানের জুটি গড়েন। ১০ ওভারে ৭.২০ গড়ে রংপুরের রান ৭২। পরের ওভারগুলোতে গেইল তান্ডবের অপেক্ষা করছিল স্টেডিয়ামে আসা ক্রিকেটপ্রেমিরা। কিন্তু খুলনার পুচকে মোহাম্মদ ইরফান থামিয়ে দেন ব্যাটিং দানব গেইলকে। লেগ স্পিনারের শর্ট বল সুইপ করতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন ২৭ বলে ৩৮ রান করা গেইল।

তার ফিরে যাওয়ার পর রংপুরের রানের চাকা অনেকটাই থেমে যায়। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে মিথুন ছক্কা হাঁকানোর পরবর্তী ৩১ বলে কোনো বাউন্ডারি পায়নি রংপুর। এ সময়ে তারা হারায় রবি বোপারা (১১) ও চামারা কাপুগেদারার (২) উইকেট। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে নাহিদুল চার হাঁকালেও পরের বলে ফিরে যান জোফরা আর্চারের দারুণ এক বাউন্সারে।

তার ফিরে যাওয়ার পর মাশরাফি আর মিথুন দলের হাল ধরেন। ২২ বলে স্কোরবোর্ডে দুজন যোগ করেন ৪২ রান। এর মধ্যে শেষ ১২ বলে ৩৩ রান পায় রংপুর। আর শফিউলের করা শেষ ওভারে আসে ২০ রান। ৮ ও ৩০ রানে জীবন পাওয়া মোহাম্মদ মিথুন শেষ ওভারে তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। ৩০ বলে ৩১ রান করা মিথুন শেষ পরের ৫ বলে করেন ১৯ রান। ৩৫ বলে ২ চার ৪ ছক্কায় এবারের বিপিএলে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। তার সঙ্গে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন মাশরাফি।

খুলনার হয়ে ২৮ রানে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন জোফরা আর্চার।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাজমুল হাসান শান্ত সোহাগ গাজীর দ্বিতীয় বলে ক্যাচ তুলে দেন। স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে অপু লোপ্পা ক্যাচ মিস করেন। ক্যাচ মিস করে রংপুরের আক্ষেপ বড় করে তুলেন অপু।

উদ্বোধনী জুটিতে এ দুই ব্যাটসম্যান ৮ ওভারে তুলেন ৬০ রান। সেই অপুই বল হাতে ব্রেক থ্রু এনে দেন। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ২০ রান করা শান্ত। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে খুলনা।

স্কোরবোর্ডে ৩৭ রান যোগ করতেই আরও ৫ উইকেট হারায় তারা। একে একে সাজঘরে ফিরেন আফিফ হোসেন (৮), মাইকেল ক্লিঙ্গার (৪৪), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৬), নিকোলাস পুরান (১) ও কার্লোস ব্রেথওয়েট (৬)।

শেষ দিকে ২ ছক্কায় ১১ বলে ১৯ রান করে খুলনাকে কিছুটা আশা দেখিয়েছিলেন জোফরা আর্চার। কিন্তু আরিফুলের সঙ্গে ভুলবোঝাবুঝিতে আর্চার ফিরে যাওয়ার পর খুলনার জয়ের স্বপ্ন ভেঙে যায়। ১৯ রানের হার নিয়ে টুর্নামেন্টের চতুর্থ পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ গ্রহণ করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

রবি বোপারা ৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে রংপুরের সেরা বোলার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *