শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৪৪ পাঠক
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক । বর্তমানকণ্ঠ ডটকম-
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন ও অব্যাহত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সবার ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।

সংসদে দেয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘জাতীয় সংসদ দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। জাতীয় ঐকমত্য ব্যতীত শান্তি ও সমৃদ্ধি স্থায়ী রূপ পেতে পারে না। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান এই মহান জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এবং সার্চ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গঠিত বর্তমান নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়, যা দেশে-বিদেশে সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছে।’

নতুন সরকারের প্রতি নানা আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতীয় জীবনে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে। আশা করি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ আরও সুসংহত ও গতিশীল হবে। শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হেঁটেছি, সে পথেই বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। আমাদের দৃষ্টি ২০২১ সাল ছাড়িয়ে আরও সামনের দিকে, ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা।’

তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী মানবাধিকার, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়ন এবং সমাজের সব স্তরে প্রত্যক্ষ জন-সম্পৃক্তির মধ্য দিয়ে আমরা নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহ অর্জনসহ একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে সক্ষম হবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, কর্মচঞ্চল, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সবার কাম্য। ইতিহাসের সাহসী সন্তানেরা লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। আমাদের দায়িত্ব এ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে বেগবান করা।’

মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জল রাখতে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে। আসুন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত করার মধ্য দিয়ে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’

উল্লেখ্য, কোনো সংসদের প্রথম এবং নতুন বছরের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ দেয়ার বিধান রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার রীতিও রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *