বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, নেত্রকোনা ,বর্তমানকন্ঠ ডটকম,বৃহস্পতিবার,১৯ জুলাই ২০১৮: নেত্রকোনা জেলার রেজিষ্ট্রি অফিস ও সদর সাব-রেজিষ্ট্রি এবং মহাফেজ খানার সমন্বয়ে স্থানান্তর এবং রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবন নির্মান জনস্বার্থে জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী।
এ প্রেক্ষাপটে চলছে ইতিমধ্যে স্বার্থান্বেষী ভাবনা। যে কারনে দেখা দিয়েছে বিড়ম্বনা। বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, জেলা রেজিষ্ট্রি কর্মকর্তা ও কম্পিউটার সহকারী কর্মচারী শাহজাহান এ স্বার্থান্বেষী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
সুত্রমতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক মঈন উল ইসলামের সভাপতিত্বে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ৩০.০৪.২০১৮ইং তারিখে ৭ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সারা দেশের বিভিন্ন জেলা রেজিষ্ট্রি ও সাব-রেজিষ্ট্রি ভবন নির্মাণ (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নেত্রকোনা জেলা রেজিষ্ট্রি ও সদর সাব-রেজিষ্ট্রি এবং সদর মহাফেজখানা সমন্বয়ে রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্যে নেত্রকোনা সদর উপজেলাধীন পারলা মৌজায় ০.৫০একর ভুমি অধিগ্রহনের জন্যে নেত্রকোনা জেলা রেজিষ্ট্রার এর ২৭-০২-২০১৮ইং তারিখে ৪৪৫নং স্মারকে প্রস্তাবের বিষয় সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন সভায় উপস্থাপনকালে ভুমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসকে লিখিতভাবে অবহিত করেন।
প্রস্তাবিত ভুমি স্ক্যাচম্যাপ ও লে-আউট প্ল্যান আয়তকার নয়। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও অবকাঠামো নির্মানের ক্ষেত্রে গ্রহনযোগ্য নয়। পারলা এলাকার প্রস্তাবিত ভুমি নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়ক হতে প্রায় সাড়ে ৩৫০ ফুট দুরে এবং এই সড়ক থেকে জন সাধারনের যাতায়াতের কোন সুযোগ সুবিধা নেই। উল্লেখ্য যে, নেত্রকোনা ময়মনসিংহ সড়ক হতে প্রস্তাবিত ভুমি প্রায় ১৫ ফুট নীচে। যার অবস্থান নদীর তটরেখার ভিতরে এবং পাড় থেকে অনেক নীচে। তাই প্রকল্পটি জেলা রেজিষ্ট্রি অফিস সহ ৩টি অফিসের গুরুত্বপুর্ণ কার্যক্রম সমাধানে রাস্তাবিহীন এবং নদীর তটরেখার ভিতরে নদী ভাঙনের ঝুকিপুর্ন স্থানে নির্মান কোন প্রকারেই যুক্তিপুর্ন নয়।
এ আলোকে, জেলাবাসী আশ্বস্ত হয়েছিল শহরের মধ্যেই পুর্বে প্রস্তাবিত নাগড়া মৌজায় অথবা পুরাতন জেলখানার সরকারী ভুমির যেকোন স্থানে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সরকার যেমন আর্থিক দিক থেকে লাভবান হবে, একই সাথে নেত্রকোনাবাসীর উক্ত বিষয়ে কার্য সম্পাদন সহজলভ্য হবে।
কিন্তু বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, নেত্রকোনা জেলা রেজিষ্ট্রি অফিস, সাব-রেজির্ষ্ট্রি ও মহাফেজ খানা স্থানান্তর ও নতুন ভবনের জন্যে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ভুমি বরাদ্দ কমিটির সভায় বাতিলকৃত প্রস্তাবিত পারলা এলাকায় অধিগ্রহন করার জন্যে জেলা রেজিষ্ট্রার ও কম্পিউটার সহকারী শাহজাহান স্বার্থানেষী ভাবনায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে নেত্রকোনা ভেন্ডার সমিতি ও দলিল লেখকগন শঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, বাতিলকৃত উপরোক্ত ভুমিতেই এই গুরুত্বপুর্ন এই ৩টি অফিস কিভাবে নতুন করে অনুমোদন করা হবে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনায় সকল শ্রেনী পেশার সচেতন মানুষের বিবেকে প্রশ্ন হচ্ছে অবশ্যই রাঘব বোয়াল টাইপের এক শ্রেনীর স্বার্থান্বেষী মহল প্রচুর অর্থের বিনিময়ে এহেন অনৈতিক এবং সরকার বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়েছে।
এদিকে নেত্রকোনাস্থ উকিলপাড়া এলাকায় অবস্থিত সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস সুত্রে জানা যায়,উল্লেখিত এলাকাতে মাদকাসক্তদের বিচরণক্ষেত্র। কিছুদিন পুর্বে পারলা এলাকার জনৈক সৈয়দ আতিউর রহমানের দোকানে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাদকসেবীরা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে।
প্রশ্ন জাগে, এই গুরুত্বপুর্ন ৩টি অফিসে দৈনিক জমি দাতা-গ্রহীতাদের মধ্যে কোটি টাকা লেনদেন সহ বড়বাজাস্থ সোনালী ব্যাংকে চালান প্রদান করা কতটুকু নিশ্চয়তা বহন করে।
এ ব্যাপাওে নেত্রকোনা জেলা দলিল লেখক সমিতির সদস্য গন জানান উক্ত পারলা মৌজার ভুমি নিয়ে আদালতে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। এমতবস্থায় ভুমি অনুমোদন কমিটি কিভাবে অনুমোদন দিতে পারে।
দলিল লেখক সমিতি সহ জেলার সর্ব মহল বুঝে উঠতে পারছেনা যে, দৈনিক লেনদেনের ব্যাপারে আমাদের (ক্রেতা-বিক্রেতা) সম্ভব হবে কিনা ?
জেলা শহরের দাতা, গ্রহীতা, দলিল লেখক সমিতি, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ঠ সকল মহলের একযোগের দাবী উল্লেখ্য ৩টি অফিস স্থানান্তর ও নতুন ভবন নির্মাণ।
নেত্রকোনা জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব আলহাজ্ব সৈয়দ আব্দুর রেজ্জাক বাচ্চু জানান দীর্ঘদিন যাবৎ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বহুবিধ চেষ্টা তদবির এমনকি পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখির পরও কোন সুফল প্রতিয়মান হচ্ছে না।
উল্লেখ্য যে, বহুদিন পুর্বে উপস্থাপিত ৩টি অফিসের নির্মানের নিমিত্তে নাগড়া মৌজার নির্ধারিত স্থানে কাগজ-পত্রাদি জমা দেয়া হয়েছিল এবং কিছুদিন পুর্বে পুনর্বার কাগজ পত্রাদি জমা দেয়া হয়েছে।
এই দপ্তরের দাতা-গ্রহিতা, কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ জেলাবাসী উপরোল্লিখিত নাগড়া এলাকার স্থানটি গ্রহনযোগ্য বলে মনে করেন।
জেলা দলিল লেখক সমিতি সুত্রে জানা যায়, উক্ত শাহজাহান ব্যাক্তিগত ও আর্থিক স্বার্থ হাসিলের লক্ষে প্রতিনিয়তই এহেন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ,এমনকি অনৈতিক এসকল কার্যক্রমের জন্যে পুর্বে ২ বার বদলীর আদেশ আসলেও অদৃশ্য কোন শক্তিতে তিনি বহাল তবিয়তে আছেন তা ১০ উপজেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিটি জনমনে আশঙ্কাজনক প্রশ্নের উদয় হয়েছে।
এমনকি জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসের কম্পিউটার সহকারী শাহজাহান জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পন্থায় (দোষ-ত্রুটি) দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করে এবং হাতিয়েও নেয়। যদি কেউ টাকা (ঘুষ) দিতে অস্বীকার বা প্রতিবাদ করে তাহলে ঐসকল কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ করেছে নেত্রকোনা দলিল লেখক সমিতির কতিপয় সদস্য গন।
এমতাবস্থায় উল্লেখ্য সকল বিষয়াদি সরেজমিনে তদন্তপুর্বক যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহনে প্রধানমন্ত্রীর সচিব সাজ্জাদুল হাসান ও জেলা প্রশাসকের সু-দৃষ্টি কামণা করছে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের ভুক্তভোগী সহ সমস্ত নেত্রকোনাবাসী।