মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন

‘পাঞ্জেরী গাইড’ নিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩৮ পাঠক
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঞ্জেরীপাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডের গাইড বই নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেওয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে হিউম্যানিস্ট সোসাইটি। বেসরকারি সংস্থা হিউম্যানিস্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম রেজা জানান, অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে তিনি লিখিত আবেদন করেছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পাঞ্জেরী গাইডে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘স্বাধীনতা ঘোষণা’ ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিকৃত এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। ওই অভিযোগের কারণে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ২ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) পাঞ্জেরীর গাইড বই না কেনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়।

মন্ত্রণালয়ের আদেশ ও মাউশির এই নির্দেশনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর হিউম্যানিস্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম রেজা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে কোনও বিকৃতি ঘটায়নি। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আমি অভিযোগ প্রত্যাহার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছি।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত আবেদনে সেলিম রেজা আরো জানান, ‘গত ২৫ এপ্রিল পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি সংক্রান্ত অভিযোগপত্র আপনার বরাবর দাখিল করি। এরইমধ্যে বিলম্ব হলেও পাঞ্জেরী কর্তৃপক্ষ আমাদের আগের নোটিশের জবাব দিয়েছে। পাঞ্জেরী অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে। এরপর আমরা একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করি গত ২ জুলাই। কমিটি সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে প্রতিবেদন পেশ করেছে। তদন্ত রিপোর্টে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আমার পেশ করা অভিযোগপত্রটি প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করছি।’

সেলিম রেজা জানান, ‘পাঞ্জেরী কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট দিতে দেরি হওয়ার কারণে আমরা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দাখিল করেছিলাম। এরপর পাঞ্জেরী কর্তৃপক্ষ রিপোর্ট দেয়। এরইমধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের গাইড বই শিক্ষার্থীরা যাতে না কেনে, সেই নির্দেশনা দেয়। এরপর গত ৪ আগস্ট আমি অভিযোগপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছি।’

হিউম্যানিস্ট সোসাইটির তদন্ত কমিটির কাগজপত্রে দেখা গেছে, দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. সদরুল আমিনকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই জন সদস্য হলেন—সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা এমএ মজিদ ও মুক্তমন ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট আরিফ উর রহমান খান।

কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের অষ্টম শ্রেণির জন্য প্রকাশিত বইয়ে অভিযোগে উদ্ধৃত ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা ও মহান স্বাধীনতা সংক্রান্ত’ বিষয়ে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য দৃষ্টিগোচর হয়নি। গত বছর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের গাইড নকল করে বাজারজাত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাঞ্জেরী কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।

উল্লেখ্য, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স প্রকাশিত অষ্টম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্রের গাইড বইয়ে বঙ্গবন্ধুর ‘স্বাধীনতা ঘোষণা’ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে হিউম্যানিস্ট সোসাইটি। এই অভিযোগে তুলে তারা পাঞ্জেরী কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ জুন পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর পক্ষে পরিচালক সুনীল কুমার ধর হিউম্যানিস্ট সোসাইটিকে অভিযোগ তদন্ত করে তা যাচাইয়ের অনুরোধ জানায়। পাঞ্জেরী কর্তৃপক্ষের এই চিঠির আগেই হিউম্যানিস্ট সোসাইটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদীয় কমিটির কাছে পাঞ্জেরী প্রকাশনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। ওই অভিযোগের পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাউশি পদক্ষেপ নেয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *