শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৫০ পূর্বাহ্ন
নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান বন্ধে দুদককে দেয়া চিঠি সর্বোচ্চ আদালতের মর্যাদা খর্ব করেছে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) এই চিঠির বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের নিষ্পত্তি করে পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেছেন আদালত। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ৭টি পর্যবেক্ষণ দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুদকের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন হবে না -দুদকে দেয়া এ চিঠি আপিল বিভাগের প্রশাসনিক চিঠি। এটি সুপ্রিম কোর্টের মতামত নয়। এ চিঠি জনমনে সর্বোচ্চ আদালতের মর্যাদা খর্ব করেছে।’
পর্যবেক্ষণে আদালত দুদকসহ অন্যান্য তদন্ত সংস্থাকে বলেছে, ‘কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত করার সময় যেন সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। কারণ এর সঙ্গে বিচার বিভাগের মর্যাদা জড়িত।’
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতি ছাড়া আর কেউ দায়মুক্তি পেতে পারেন না। এ চিঠি জনগণের মাঝে এই বার্তা দিয়েছে যে, একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ফৌজদারি কর্মকাণ্ডে দায়মুক্তি পাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে রাষ্ট্রপতি ছাড়া কেউ আইনের ঊর্ধে নয়।’
আপিল বিভাগের প্রাক্তন বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান বন্ধে দুদককে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ৯ অক্টোবর রুল জারি করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর রুলের শুনানি শেষ হয়। দুদককে দেয়া চিঠির বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী বদিউজ্জামান তরফদার। এরপর আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে। রুল শুনানিতে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে মতামত দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, প্রবীর নিয়োগী ও এ. এম আমিন উদ্দিন।
প্রাক্তন বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস দেয় দুদক। বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে চলতি বছরের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। এর জবাবে গত ২৮ মার্চ আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুনাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত ওই চিঠি দুদকে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।