শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন

যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যে জাতীয় শোকদিবস ও জাতির পিতার শাহাদাত বার্ষিকী পালনে বাংলা স্কুল রিয়াদ

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৪৩ পাঠক
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন

বর্তমানকন্ঠ ডটকম : আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মহামারী করোনার কারণে আলোচনা অনুষ্ঠানটি গুগলমিট অ্যাপস এর সাহার্যে সম্পন্ন করা হয়।

বিদ্যালয়ের বোর্ড অব ডাইরেক্টর্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাক আহম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংরাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইং কাউন্সেলর ও বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিওডি’র ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম, এসিস্ট্যান্ট সিগনেটরি ইঞ্জিনিয়ার গোফরান, কালচারাল ডাইরেক্টর সফিকুল সিরাজুল হক প্রমুখ।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ খাদেমুল ইসলামের সঞ্চালনায় ইসলামী শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক ও বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মাদ জহিরুল ইসলামের পবিত্র কোরান থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে শোকদিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সারাহ কবির, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এহসানুল রাফিদ আদিব ও মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন তাহিয়া জামান।

বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোঃ আফজাল হোসেন তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে অসামান্য অবদানের সংক্ষিপ্ত ভাষা চিত্র তুলে ধরেন এবং তাঁর আদর্শকে ধারণ করার জন্য আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বিদ্যালয়ের কালচারাল ডাইরেক্টর সফিকুল সিরাজুল হক বলেন, এই দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের দিন। যার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি অথচ চরম অকৃতজ্ঞের মত কিছু বিপদগামী সেনা সদস্য নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয় নি সেইদিন বাসায় উপস্থিত সবাইবে নির্বিচারে হত্যা করে। ইঞ্জিনিয়ার গোফরান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ। শোকের এইদিনে তিনি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার উদাত্ত আহ্বান জানান। পাশাপাশি জাতিপিতার হত্যাকান্ডের সঙ্গে যুক্ত নুর উদ্দীন ও মেজর ডালিমের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিভিন্ন খেতাব বাতিলের আহ্বান জানান। মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা ভেবেছিলো জাতির পিতাকে হত্যা করে বাঙালির অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করে দেবে। কিন্তু সেই হন্তারক আমাদের থেকে জাতির পিতার প্রাণ কেড়ে নিলেও জাতির অগ্রযাত্রাকে স্তমিত করে দিতে পারেনি। তার যোগ্য উত্তরসূরী মানবতাবাদী নেত্রী চারবারের নির্বাচিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপযুক্ত সময়ে জাতির হাল ধরেছেন। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দুঃসময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন অনুদান তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। বর্তমান সময়েও বিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো বিনির্মাণের তাঁর আঠারো কোটি টাকার অনুদানের জন্য আবারও সকৃতজ্ঞ অভিভাদন জানান।

প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ কাউন্সেলর মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, জাতির পিতা এবং তার পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যার পর তাদের দোসরচক্র ক্ষমতায় এসে একটা দীর্ঘ সময় বাঙালি জাতিকে সত্যিকার ইতিহাস জানানো থেকে বিরত রাখে। এখন সময় এসেছে সত্যিকারের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার। শিক্ষার্থীদের কাছে অন্তত দুইমাস অন্তর অন্তর হলেও জাতির পিতাকে নিয়ে রচিত বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরা। ছাত্রছাত্রীদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস শিক্ষা দিতে হবে। জাতির পিতার অসামান্য অবদানের কথা সবাইকে জানাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ মোস্তাক আহম্মদ বলেন, ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য। স্বদেশের অবহেলিত দুঃখী মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য। তাঁর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনের মাত্র চার বছরের মাথায় দেশি-বিদেশি চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন জাতির পিতা। ১৯৭১ এর ২৬ মার্চ ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের যে ঐতিহাসিক বাসভবন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেই গৃহেই বুলেটে বিদীর্ণ করা হয়েছিল তাঁকে। অকুতোভয় শেখ মুজিব মৃত্যুবরণ করেও অমর, চিরঞ্জীব-চিরভাস্বর।

সেদিন ঘাতকের দল ইতিহাসের মহানায়ককে, বাঙালির জাতিরাষ্ট্রের স্রষ্টাকে, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতাকে হত্যা করে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালিকে সপরিবার হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে জাতির ললাটে লেপন করে কলঙ্কের কালিমা। সেই হত্যাযজ্ঞের মর্মস্পর্শী দৃশ্যপট চিত্রায়িত হয়েছে কবিতায় ‘তবু তোমার বুকেই গুলির পর গুলি চালালো ওরা/ তুমি কি তাই টলতে টলতে টলতে টলতে বাংলার ভবিষ্যৎকে/ বুকে জড়িয়ে সিঁড়ির ওপর পড়ে গিয়েছিলে?’

বঙ্গবন্ধু আমাদের সেই মহার্ঘ্য প্রতীক, আমাদের পতাকা, একান্ত মানচিত্র, আপামর বাংলার। তিনি রাজনীতির মহাকবি, বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন দিয়ে রচনা করেছন আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা।
যারা জাতির পিতা ও তার পরিবারবর্গকে নৃসংসভাবে হত্যা করেছে তাদের এই জঘন্যতম অপরাধের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এমন জঘন্যতম হত্যাকান্ড পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি ঘটেনি। তিনি জাতির পিতার আত্মার শান্তি কামনা করেন। পরিশেষে বিদ্যালয়ের সামগ্রিক কর্মকান্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবসময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন। বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত অনুদানের কথা সকৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করেন। তিনি উপস্থিত সকলকে আশ^স্থ করে বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে জাতির পিতার অসামান্য অবদান এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষে বিভিন্ন ডকুমেন্টারি প্রতিটি অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচার করা হয় এবং তার উপর প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সঠিক ইতিহাস ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয়।
পরে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ সকল শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মুনাজাত পরিচালনা করেন ইসলামী শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক নেসার উদ্দিন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *