বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৯ অপরাহ্ন

যৌনদাসী বানানো হচ্ছে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নারীদের (ভিডিও)

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩৭ পাঠক
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৯ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৭: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে এলেও, এদের মধ্যে অনেকের ভাগ্যেই সেই কাঙ্ক্ষিত নিরাপত্তা জোটেনি। আশ্রয়হীন সহায়সম্বলহীন এসব রোহিঙ্গার মধ্যে অনেকেই যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। বিবিসির সাংবাদিক রিটা চক্রবর্তীর এই প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো।

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত। দিনের বেলায় এখানে রয়েছে অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা। কিন্তু রাতের বেলা এখানে দেখা যায় ভিন্ন এক দৃশ্য। আর সেটা খুব একটা সম্মানজনক নয়। এখানে রোহিঙ্গা তরুণীদের দেহ ব্যবসায় লাগানো হয়েছে। আর এটা করছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন। সাথে রয়েছে কিছু স্থানীয় বাংলাদেশি।

দেহব্যবসার জন্য তাদের বিক্রি করা হচ্ছে। রিটা চক্রবর্তীর সাথে ১৭ বছর বয়সী এক তরুণীর সাথে কথা হয়। তাকে একটি হোটেলে আটকে রেখে জোর করে দেহব্যবসা করাচ্ছে কয়েকজন রোহিঙ্গা। এখানে মেয়েটির অবস্থা যৌনদাসীর মতো।

নিরাপত্তার স্বার্থে তার পরিচয় গোপন রাখা হয়। মেয়েটি বলছে, ‘আমি এখানে কাপড়-চোপড় ধুই। তারা আমাকে দু’বেলা খেতে দেয়। আমি সারাদিন খাটি।’

‘রাতের বেলা ওরা আমাকে বিছানা থেকে টেনে তোলে। তাদের মুখ ঢাকা থাকে। আমি কান্নাকাটি করলে তারা আমাকে মারধর করে। ছুরি দিয়ে খুন করার ভয় দেখায়। আমার গলা টিপে ধরে।’তরুণীটি বলছে, এজন্য তাকে কোন টাকাপয়সা দেয়া হয় না।

আরেকটি মেয়ে, যার বয়স ১৫ বছর। সে জানায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তার মাকে গুলি করে হত্যা করার পর সে নৌকায় চড়ে পালিয়ে আসে। নৌকা ভাড়ার জন্য তার শেষ সম্বলটুকু দিয়ে দিতে হয়। এরপর নৌকার মাঝি তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

সে বলছে, ‘আমার কাছ থেকে সোনা গয়না নিয়ে সে আমাকে নৌকায় তুলে নেয়। নৌকার ভেতরে ঢোকার পরই সে আমাকে ধর্ষণ করে। আমি বাধা দিলে সে বলে নৌকায় যেতে চাইলে তার কথা শুনতে হবে। আমি তখন খুব কাঁদছিলাম।’

বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর তার আশ্রয় হয় এক মহিলার ঘরে। তরুণীটি ভেবেছিল ওই মহিলা তাকে সত্যি সত্যি সাহায্য করছে।
কিন্তু এখন ওই মহিলা তাকে দিয়ে জোর করে দেহব্যবসা করাচ্ছে।প্রতি রাতে তার ঘরে ঢুকছে একাধিক পুরুষ।

তরুণীটি বলছে, ‘তারা মহিলাকে টাকা দেয়। ৩ জন এলে আমাকে ২৫০ টাকা দেয়। দুজন এলে দেয় ২০০ টাকা। এসব আমার ভাল লাগে না। আমার খুব ব্যথা লাগে।’

‘দু’জন বা ৩ জন যখন একসাথে আসে। আমি তখন আর সহ্য করতে পারি না। তখন ৩ জনের মধ্যে থেকে একজন চলে যায়। তারা আমাকে ওষুধ দিয়ে বলে এটা খাও। ওষুধ খাওয়ার পর আমি আর ব্যথা টের পাই না।’

কক্সবাজারের স্থানীয় লোকজন এই দুই তরুণীকে এখন সাহায্য সহযোগিতা করছে। কিন্তু তাদের মতো নিরাশ্রয়, সহায়হীন নারী এখানে রয়েছে অনেক।মিয়ানমারের সহিংসতা ছেড়ে পালিয়ে এসব নারী এসে পড়েছে এক নতুন নরকের মধ্যে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *