শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৬ অপরাহ্ন

রাজনীতির নৈরাজ্য

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৮২ পাঠক
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৬ অপরাহ্ন

সৈয়দ মুন্তাছির রিমন, বর্তমানকন্ঠ ডটকম : বাংলার স্বাধীনতা, মুক্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্টার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কাঠামো গুলো সবচেয়ে অবদান রেখেছে। আন্দোলন ও সংগ্রামের স্রোতধারায় ব্যাপক রক্তক্ষরণের মাধ্যমে তীলে তীলে এই লাল-সবুজ পতাকা তার নিজস্ব বলয় তৈরি করেছে। এই বলয়ের সারমর্ম হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। এই সরকার ব্যবস্থায় জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা মূল মন্ত্র বা অঙ্গিকার। যা একটি আদশ্য রাষ্ট্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য।

আজ বাস্তবতার নিরীক্ষণে এই বৈশিষ্ট্য গুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোতে ‘রাজনৈতিক মুক্ত শিক্ষাঙ্গন’ সাইনবোর্ড গুলে ঝুলতে দেখেছি। আমরা যে রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন দেশের জন্য জন্ম দিয়েছি। সেই স্বাধীন দেশে রাজনীতিকে একটি কলঙ্কীত বা অপরাধ নামে অভিহিত করেছি। রাজনৈতিক মুক্ত শিক্ষাঙ্গনের জন্য কত শত আন্দোলন দেখেছি। শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলো নিজস্ব আইন করে রাজনীতি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এরশাদ সরকারের ছাত্র রাজনীতি বন্ধের প্রয়াসকে পরবর্তী সময়ে আমরা সমর্থন করেছি। কিন্তু আমরা এই ছাত্র রাজনীতি বন্ধের প্রয়াস জাতিকে নেতৃত্ব শূন্যের নীল নকশার জ্বাল একবার কি ভেবে দেখেছি? আজ এই জাতির ভাগ্যাকাশে কালো মেঘের বর্ষণ হচ্ছে। যে বর্ষণের ফলে সরকারের প্রতি স্তম্ভ দায়িত্বহীন ও দূর্নীতির করাল ঘ্রাসে আচ্ছন্ন। এদেশের রাজনীতি হয়ে উঠেছে ক্ষমতা আর আধিপত্যের রমরমা বাণিজ্য।

যে বাণিজ্যের জন্য রাজনীতির মৌলিক চেতনা গণতন্ত্র, মানবতা ও সুস্থতার চর্চা হারিয়ে গেছে। তাই সমাজে বৃদ্ধি পেয়েছে নৈরাজ্য। প্রতিদিন খুন, হত্যা, ধর্ষন, দূর্নীতি, সন্ত্রাস ও সুস্থ অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙ্গে গেছে। তার কুফল ভোগ করছে এদেশের সাধারণ। যাদের স্বপ্ন আর কর্মক্ষয়ের মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির রাজ্যে আসীন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এজাতির সম্মুখে একদিকে জীবিকা অন্যদিকে জীবনের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য লড়াই করতে হয়। যে লড়াই সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিল। কিন্ত এই সরকার ব্যবস্থায় জনগণের বেচেঁ থাকার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। জনগণের বেচেঁ থাকার মৌলিক একটিও অধিকার এই সরকার নিশ্চিত করতে পারেনি।

বরং অধিকারের জন্য আন্দোলন ও প্রতিবাদ হাতে কলম চালালে নেমে আসে গুম, খুন, মামলা ও জেল-জুলুম। দেশের প্রতিবাদী বাকশক্তি গুলোকে গলাটিপে হত্যা করা হয়। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা পদে বহাল থাকা অবস্থায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য দেশান্তরিত হতে হয়। এই হলো বিচার বিভাগ। সাংবাদিক সাগর-রুনিকে নিজগৃহে লাশ হতে হয়। সাধারণ পুলিশের গুলিতে সেনা অফিসার জীবন দিতে হয়। আর ধর্ষিত নারী, ধর্মান্ধের আগ্রাসন, মাদকের বাণিজ্য ঘাট কিংবা অপরাজনীতি হিস্যা নাই দিলাম। কিন্তু গণতন্ত্রের মৃত্যু সুনিশ্চিত। এই মৃত্যুপুরী থেকে জাতিকে রক্ষার জন্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। ড্রামাটিক সরকার ব্যবস্থা পরিহার করে জনকল্যাণমুখি দেশপ্রেমে উজ্জীবিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। যাতে এদেশে কোন সন্তান আর অকালে তার পিতাকে হারাতে না হয়। রাজনৈতিক দল গুলোকে ক্ষমতার মসনদে বসার লালসা থেকে বেরিয়ে মানবিক সরকারী ব্যবস্থায় রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে। এই সুস্থতার জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম তীব্রতর করতে হবে। আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে।

লেখকঃ সাংবাদিক ও কলামিস্ট, প্যারিস-ফ্রান্স।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *