বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০১ অপরাহ্ন

সাকিবদের দুর্দান্ত দাপটে জয়

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৪৩ পাঠক
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০১ অপরাহ্ন

খেলা ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৭: ইভিন লুইস তখন ব্যাট করছিলেন ৩৬ রানে। ২১ বলে এই রান। এরপরের ৬টি বল খেলার পর তার রান হলো ৬৭! মাঝে এ ৬ বলের ৫টিতে মেরেছেন ছক্কা। যার ৪টি হজম করতে হয়েছে সানজামুল ইসলামকে। এটা ম্যাচের একটি খণ্ডচিত্র। ক্যারিবিয়ান ইভিন ঝড়েই স্বপ্নভঙ্গ হয় চিটাগং ভাইকিংসের। এই ধ্বংসাত্মক ওপেনার যখন থামলেন ততক্ষণে দল পেয়ে গেছে জয়ের ভিত। বাকিটা শেষ করেন সাকিব, ডেনলি ও ডেলপোর্টরা। টানা দুটি হারের পর আবার জয়ের ধারায় ফিরে আসে দলটি। ৭ উইকেটের জয় পায় ঢাকা ডায়নামাইটস। তাতে আপাতত পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে শেষ চারে এক পা দিয়ে রাখলো গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। অন্য দিকে এই হারে বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেলো হোমটিম চিটাগং ভাইকিংসের।
চিটাগংয়ের দেওয়া ১৮৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দাপুটে এই জয় তুলে নিতে তেমন কষ্টই হয়নি ঢাকার। তবে শুরুটা ভালো ছিলো না তাদের জন্য। তাসকিন আহেমদের করা ইনিংসের তৃতীয় বলেই ফিরে যান বুম বুম শহীদ আফ্রিদি (০)। উল্লাসে মাতে স্বাগতিকরা। তবে তাসকিনের চেয়ে এ আউটের কৃতিত্ব বেশি ছিল অধিনায়ক লুক রনকির। মিডঅফে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ এক ক্যাচ লুফে নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরই হতাশার শুরু বন্দর নগরীর দলটির।
আফ্রিদির বিদায়ের পর লুইসের সঙ্গে যোগ দেন এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ইংলিশ জো ডেনলি। শুরুতেই তার বাজিমাত। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৮ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। তাতে লুইসের সংগ্রহ ৭৫ রান। মাত্র ৩১ বলে খেলেন বিধ্বংসী এ ইনিংস। চার মেরেছেন ৩টি। তবে ছক্কা মেরেছেন তার তিনগুণ – ৯টি। আরও একটি ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন ডিপ কভারে। রায়াদ এমরিতের বলে ফিল্ডার নজিবুল্লাহ জাদরান সীমানায় বলটি ধরেন সহজেই। চট্টগ্রামের দর্শকদের তখন বাঁধভাঙ্গা উল্লাস। কিন্তু তাতে ক্ষতি হয়নি ঢাকার। কারণ কাজের কাজটি আগেই করে দিয়েছেন লুইস।
লুইসকে তুলে নেওয়ার পরের ওভারেই ডেনলিকেও আউট করে চিটাগং। ৩৯ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৪ রান করেন এ ব্যাটসম্যান। ডিপ মিড উইকেটে তার ক্যাচ নেন সিকান্দার রাজা। তাতে কিছুটা আশা ফিরে আসে স্বাগতিকদের। কিন্তু ক্যামেরন ডেলপোর্টকে নিয়ে তাদের আরও একরাশ হতাশা উপহার দেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। চতুর্থ উইকেটে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৭২ রানের জুটি। ফলে ৭ বল ও ৭ উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ঢাকা। ২৪ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪২ রান করেন ডেলপোর্ট। সাকিব করেন ২২ রান। চিটাগংয়ের পক্ষে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন, এমরিত ও তানবীর।
এর আগে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সোমবারও দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি করলেন চিটাগংয়ের অধিনায়ক লুক রনকি। বরাবরের মতোই দলকে এনে দিলেন উড়ন্ত সূচনা। কিন্তু এদিন তাদের ইনিংসের নায়ক ঠিক রনকি নন। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে ম্যাচের প্রথম ভাগের সব আলো কেড়ে নিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। খেলেছেন ৭২ রানের মারমার-কাটকাট এক ইনিংস। ফলে লড়াকু সংগ্রহই পেয়েছে হোমটিম। দুই ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮৭ রান করে ঘরের দর্শকদের জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে যায় দলটি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকার বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে চিটাগং। তবে দলকে হতাশ করে শুরুতেই ফিরে যান দলের আইকন তারকা সৌম্য সরকার (১)। এরপরই উইকেটে আসেন বিজয়। একটি ফিফটির পর কয়েক ম্যাচে ব্যর্থ। কিন্তু এবার অধিনায়কের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন। ১০৭ রানের জুটিতে দলকে বিশাল সংগ্রহের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ১৩ ওভারেই দলটির সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ১২৪ রান। কিন্তু ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই আউট হন রনকি। ঢাকার অধিনায়ক সাকিবকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন। সীমানার কাছে ধরা পড়েন শহীদ আফ্রিদির হাতে। তবে আউট হওয়ার আগে খেলেন ৫৯ রানের ইনিংস। সমান ৪টি চার ও ছক্কায় ৪০ বলে নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন এ কিউই ব্যাটসম্যান।
রনকি আউট হওয়ার পরই রানের গতিতে ভাটা পরে চিটাগংয়ের। এক ওভার পর আউট হন বিজয়ও। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা। আবু হায়দার রনির বলে ডেলপোর্টের তালুবন্দি হওয়ার আগে খেলেন ৭২ রানের ইনিংস। এদিন চারের চেয়ে ছক্কার দিকেই নজর বেশি ছিল এই ব্যাটসম্যানের। ৩টি চার সঙ্গে ৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন এনামুল। আর এ রান করতে বল মোকাবেলা করেছেন ৪৭টি। এরপর শেষ দিকে নজিবুল্লাহ জাদরানের ১৬ ও সিকান্দার রাজার মাত্র ১২ বলে ২৬ রানের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৮৭ রান করে দলটি।
এদিন চিটাগংয়ের ব্যাটসম্যানরা সবচেয়ে আগ্রাসী ছিলেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিবের বলেই। তার ৪ ওভারে ৫১ রান তুলে নেয় দলটি। তবে ধারার বিপরীতে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন সুনীল নারিন। ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়েছেন তিনি। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব, শহীদ, নারিন ও রনি। বোলাররা এদিন মার খেলেও ব্যাটসম্যানরা ঠিকই ঢাকার মুখে হাসি ফুটিয়েছে শেষে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *