বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন

সিন্ডিকেট চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিবন্ধির টাকা

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩১ পাঠক
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন

বর্তমানকন্ঠ ডটকম, ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে দেশের দুখি মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে যখন সহয়োতার নানা উদ্যোগ্য গ্রহণ করেছেন। ঠিক এমন সময় একটি অসাধু চক্র প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ভাবর্মূতি ক্ষুন্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও শোকের মাসে ১১ আগষ্ট হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিবন্ধি বিধবা ও বয়স্কদের ভাতা প্রদানের সময় একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন অজুহাতে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে টাকা। সরজমিন এ প্রতিবেদক টাকা বিতরণের সময় ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হলে, ভুক্তভুগি প্রতিবন্ধি বিধবা ও বয়স্ক ভাতা ভোগিরা অভিযোগ করেন। ৬ নং ওয়ার্ডের মিরাপুর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আনিকুলের বাবা আতাউর রহমান, একই গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী ফয়সাল আলীর মা ফাতেমা বেগম, পাথরপুজা গ্রামের আলিজার ছেলে মুজিবুর রহমান, মিরাপুর গ্রামের বয়স্ক ভাতা প্রাপ্ত আমিনা বেগম, ৭ নং ওয়ার্ডের মচকৈল গ্রামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শ্রী রিকলের বাবা শ্রী রাজোসার অভিযোগ করে বলেন, ভাতা করে দেয়ার সময় ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য কহিনুর বেগম ১হাজার ৪শত টাকা নিয়েছেন টাকা (১২ আগষ্ট) ৩শত টাকা নিয়েছেন। টাকা নেয়ার ঘটনাটি এ প্রতিবেদককে অভিযোগ করলে মিরাপুর গ্রামের ফারুকের প্রতিবন্ধি ৮ বছরের মেয়ে মুর্শিদা খাতুনের ভাতা পরবর্তীতে বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন এ নারী সদস্য।
এছাড়া আরো অন্যান্য ইউপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ ও মহিলা বিষয়ক অফিসের কর্মচারী শাহনাজ খাতুনের এক সিন্ডিকেট উপকারভোগিদের কাছ থেকে ৩শত টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেন। সরজমিন টাকা বিতরণ কক্ষে গিয়ে দেখা যায় টাকা আদায়য়ের মহাৎসব চলছে। এসময় টাকা আদায়ের ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। টাকা আদায়ের সময় গ্রামপুলিশ অজান, সমাজসেবা কর্মী শাহানাজ খাতুন ও নারী ইউপি সদস্য কহিনুর বেগম উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবন্ধি, বিধবা ও বয়স্কদের টাকা প্রদান কক্ষে গোমস্তাপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কারিগরি প্রশিক্ষক শাহানা খাতুনের উপস্থিতিতে বইয়ের নামে ৬ নং ওয়ার্ড গ্রাম পুলিশ অজান প্রত্যেক সুবিধা ভোগিদের কাছ থেকে ৩শত করে টাকা জোর পূর্বক আদায় করছেন।

সংবাদিকদের উপস্থিতিতে উপকারভোগিরা জানতে পারেন তাদের কোন টাকা লাগবে না। এ খবরে উপকারভোগিরা তাদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত পেতে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় গ্রাম পুলিশ আদায় করা টাকা দ্রুত সবাইকে ফেরত দেয়া শুরু করেন। পরে অপর গ্রাম পুলিশ গোফুর, আসাদুল, আশরাফুল, এসলাম এ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় উত্তেজিত উপকারভোগিদের কবল থেকে রক্ষা পেতে পালিয়ে যায়।

উপস্থিত সিন্ডিকেটের বেশ ক’জন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থল থেকে স্টকে পড়েন। এ ব্যাপারে গ্রাম পুলিশদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, খুশি হয়ে উপকারভোগিরা তাদের টাকা দিচ্ছেন। ইউপি সদস্য কহিনুর বেগম টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করলেও উপকারভোগিরা তার মুখের উপর টাকা নেয়ার অভিযোগ করেন।

অনেকেই অভিযোগে করে বলেন, সমাজসেবা কর্মী শাহানাজ খাতুন উপকারভোগিদের টাকা দেয়া শেষ করে গ্রাম পুলিশদের মাঝে হাতিয়ে নেয়া টাকা ভাগ বন্টন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এদিকে নামপ্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি সদস্য বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের কিছু কিছু সদস্য আছেন তারা এ অসহায় উপকারভোগিদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিবাদ করার মত শক্তি নেই।

সমাজসেবা কর্মচারী শাহানাজ খাতুন বলেন, তিনি সেখানে বই দিতে আসেন। বই দিয়ে চলে যান। কিন্তু সরজমিন তাকে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টাকা আদায় সিন্ডিকেটের সাথে খেকে অবৈধ ভাবে টাকা আদায়ে সহযোগিতা করতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান বাইরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুশি হয়ে উপকারভোগিদের কাছ থেকে গ্রাম পুলিশেরা ২০/৫০টাকা করে আদায় করেন। তবে ৩শত করে টাকা আদায়ের ব্যাপারে তার জানানা নেই বলে জানান।

এ ব্যাপারে গোমস্তাপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বইসহ সরকার সব কিছুই বিনা মূল্যে দিচ্ছেন। কেউ যতি অর্থ আদায় করে থাকে তবে এটি অন্যায়। তার কর্মচারী সেখানে যেতে পারেন। তবে উপকারভোগিরা তাদের টাকা ঠিক মত বুঝে পাচ্ছেন কিনা। যদি তিনি অর্থ আদায়ের সাথে জড়িত থাকেন তবে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বলেন।

এদিকে প্রতিবন্ধী বিধবা ও বয়স্ক ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ায় সরকারের ভাবর্মতি ক্ষুন্ন করায় সিন্ডিকেটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করেছেন সচেতন মহল। উল্লেখ, এ ইউনিয়নে মোট প্রতিবন্ধী ২শত ৯৮ জন, বয়স্ক ৫৩ জন, বিধবা ৬৫ জন উপকারভোগী রয়েছেন বলে সমাজসেবা অফিসের কর্মচারী শাহানাজ খাতুন জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *