বাংলাদেশের অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি ও জাহাজ নির্মাণসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৭ নভেম্বর) আবুধাবির সাংগ্রিলা হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ীদের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ক্রমাগত বাড়ছে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের পারস্পরিক উদ্যোগ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বাড়বে এবং বহুমুখী হবে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ও বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী তৈরি পোষাক শিল্প, অবকাঠামো, নির্মাণ, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, শিল্প পার্কসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও আমিরাতের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিপুল সম্ভবনা রয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি সেক্টরে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর অনেক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছি।
বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, পাট, পাটজাত পণ্য, সিরামিক, চামড়া, খাদ্য, প্লাস্টিক, নিটওয়্যার, হিমায়িত খাবার, টেক্সটাইল ও হোম টেক্সটাইল, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য আমদানি করতে পারে।
এসময় টেকসই ইকোনোমিক জোন, হালাল ফুড প্রসেসিং ইউনিট এবং সার্টিফিকেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠায় এমিরেটস ইকোনোমিক জোনের আগ্রহের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একইসঙ্গে দ্রুত শিল্পায়নের ফলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ চাহিদা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠায় সরকারের চলমান কার্যক্রম এবং বাংলাদেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগ নীতিতে বাংলাদেশ সবচেয়ে উদার। বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা আইন, উদার কর রেয়াত নীতি, মেশিনারি আমদানিতে শুল্ক হ্রাস সুবিধা, বাধাহীন মূলধন ফেরত নেওয়ার নীতি, মূলধন ও লভ্যাংশের পূর্ণ প্রত্যাবর্তনসহ আরও অনেক সুবিধা রয়েছে এখানে।
চলতি বছরের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রিলাম ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) সুলতান আল রাশেদ লোটাহ্, এমিরেট ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডি আবদুল্লাহ আল কাশিম ও মালাবার গোল্ড’র এমডি (ইন্টারন্যাশনাল অপারেশন্স) শামলাল আহামেদসহ আরও অনেক ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা।