ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। নিহত ওই সাংবাদিকের নাম ওকসানা বাউলিনা। রুশ সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে প্রাণ হারান তিনি। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নিহত ওকসানা বাউলিনা রাজধানী কিয়েভ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভ থেকে ইনভেস্টিগেটিভ ওয়েবসাইট দ্য ইনসাইডারের জন্য রিপোর্ট করছিলেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। এতে বলা হয়েছে, কিয়েভ শহরের পডিল জেলায় হামলায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্রগ্রহণের সময় তিনি মারা যান।
বিবিসি বলছে, বাউলিনা এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক ও বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের হয়ে কাজ করতেন এবং পরে রাশিয়া ছাড়েন। গত বছর রুশ কর্তৃপক্ষ নাভালনির এই ফাউন্ডেশনকে অবৈধ ঘোষণা করে চরমপন্থি সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত করে। ফলে এর অনেক কর্মী বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
দ্য ইনসাইডার জানিয়েছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলায় আরও একজন নিহত ও দু’জন আহত হয়েছেন। নিহত হওয়ার আগে বাউলিনা কিয়েভ ও পশ্চিম ইউক্রেনীয় শহর লভিভ থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছে ইনসাইডার।
এদিকে, ওকসানা বাউলিনার মৃত্যুতে তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি ‘গভীর সমবেদনা’ প্রকাশ করেছে ইনভেস্টিগেটিভ এই ওয়েবসাইটটি। অনুসন্ধানী সাংবাদিক আলেক্সি কোভালিভও বাউলিনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, ইউক্রেনে রুশ সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরুর পর গত এক মাসের যুদ্ধে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং ওকসানা বাউলিনা তাদেরই একজন।
চলতি মার্চ মাসের শুরুতে ইউক্রেনীয় টিভি চ্যানেল লাইভ-এর ক্যামেরা অপারেটর ইয়েভেনি সাকুন কিয়েভের টিভি ট্রান্সমিশন টাওয়ারে হামলায় নিহত হন। তিনি স্প্যানিশ বার্তাসংস্থা ইএফই-তেও কাজ করেছেন।
এর দুই সপ্তাহ পরে ৫০ বছর বয়সী মার্কিন সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রেন্ট রেনডকে কিয়েভের বাইরে ইরপিন শহরে চিত্রগ্রহণ করার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়।
এর দু’দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের দুই সাংবাদিক নিহত হন। তাদের নাম পিয়েরে জাকরজেউস্কি এবং ওলেক্সান্দ্রা কুভশিনোভা। রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠে হোরেঙ্কা নামক স্থানে সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়িতে গোলা আঘাত হানলে ৫৫ বছর এবং ২৪ বছর বয়সী এই দুই সাংবাদিক প্রাণ হারান।