রংপুর সংবাদদাতা- বর্তমানকণ্ঠ ডটকম:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে সংলাপ তার সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
তিনি বলেছেন, ‘তাদের সাত দফা দাবির কোনোটিও মানা সম্ভব নয়। তাই সংলাপ কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে আগে থেকেই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তিনি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ঐক্যফ্রন্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ চান, সংসদ ভেঙে দিতে চান, এসব দাবির কোনোটিই মেনে নেয়া সম্ভব নয়। ফলে সংলাপ ব্যর্থ হবে বলে মনে হয়।
তিনি সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা কি পদত্যাগ করবেন? এ রকম অনেক অসাংবিধানিক দাবি তারা করেছে যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া সম্ভব নয়।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর পর্যটন মোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘বিএনপি এখন নেতাবিহীন। তাদের চেয়ারপারসন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে, তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত হয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এখন ড. কামালকে নিয়ে তারা ঐক্যফ্রন্ট করেছে। বিএনপি আদৌ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এখন যতই রাজনৈতিক দল থাকুক না কেন, একমাত্র জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষমতা রাখে আর বিএনপি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে রয়েছে। ফলে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এ রকম প্রস্তুতি নিয়ে আমরা নির্বাচনের জন্য তৈরি আছি। তবে আগামী নির্বাচনও অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে কিনা সে নিয়ে সংশয় রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় পার্টির সংলাপ নিয়ে প্রসঙ্গ তুলে এরশাদ বলেন, আমি আমার দলের নেতাদের নিয়ে ৫ নভেম্বর বঙ্গভবনে যাব সংলাপ করতে নয়, শুভেচ্ছা জানাতে চা খেতে । আমি দাবি-দাওয়া নিয়ে এককভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে কথা বলব।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। আমাকে ৫ নভেম্বর বঙ্গভবনে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ২১ জন নেতা নিয়ে সব কথা বলা সম্ভব নয়।
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ‘ইভিএম সম্পর্কে আমি প্রথম থেকে আপত্তি জানিয়ে আসছি। কারণ ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হলে সেই ভোটে কারচুপি করা সম্ভব। সে কারণে আমি আবারো ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাব।’
এর আগে ঢাকা থেকে বিমানে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করেন এরশাদ। দলের নেতাকর্মীরা সেখানে ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। পরে তিনি মোটর শোভাযাত্রাসহ রংপুর পর্যটন মোটেলে আসেন। এ সময় জাপার কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর খালেদ আকতার (অব.), ফকরুজ্জামান জাহাঙ্গির, মহানগর জাপা সভাপতি সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আহাম্মেদসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর পরে সন্ধ্যায় এরশাদ লাহিড়ির হাটে এক পথসভায় বক্তব্য রাখবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।