বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। এই মহামারি থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে সরকারের নির্দেশনার লকডাউন বাস্তবায়নে জেলার ৮টি উপজেলায় দিন রাত চষে বেড়াচ্ছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
জেলা প্রশাসনে এমনিতেই লোকবল অপ্রতুল এরই মধ্যে মাঠে কাজ করতে গিয়ে এডিসি রেভিনিউ করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুই জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট করোনা পজেটিভ হয়ে কোয়ারাইন্টাইনে রয়েছেন। তারপরও ভয়কে উপেক্ষা করে সরকারের লকডাউনকে বাস্তবায়ন করতে বিরামহীন ছুটে চলেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটে যাচ্ছেন প্রতিটি উপজেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। প্রতিনিয়ত জেলার প্রতিটি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ করোনা প্রতিরোধের সাথে যারা জড়িত সকলের সাথে যোগাযোগ করে চলেছেন। জনগণকে সচেতন করা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি নি¤œ আয়ের মানুষের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী তাদের বাড়ি পৌঁছে দেয়ার মত কাজটি করে চলেছেন প্রতিনিয়ত জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
এছাড়া এই দুঃসময়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজ কর্মস্থলে থেকে অসংখ্য গরীব দুঃখী ও অসহায় মানুষকে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত অর্থ দিয়ে তাদের কষ্ট লাঘবে পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর এ সকল কর্মকান্ড প্রশংসনীয় এবং দৃশ্যমান। এরই মধ্যে এসব কর্মকান্ডের কারণে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশকে মানবিক একজন মানুষ হিসেবে সাধারণ মানুষ মনে করছেন।
লকডাউনের প্রথম দিন থেকে সকালের মধ্যেই শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে বেরিয়ে পড়েন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনকে পুরো দমে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা। কোথাও কোন রকম আইনের ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে জরিমানাও করছেন তারা।
জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, যারা অপ্রয়োজনে রাস্তায় বের হচ্ছেন তারা নানা ধরনের মিথ্যা অজুহাত দিচ্ছেন। কেউ বলছে রোগী আছে, বা রোগীকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছি। কেউ বলছে ঘরে বাজার নেই বাজার করতে যাচ্ছি। তবে অপ্রয়োজনে যারা রাস্তায় বের হচ্ছে তারা কেউ রেহাই পাচ্ছেন না। অপ্রয়োজনীয় চলাচলকারীদের ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা গুণতে হচ্ছে।
তিনি সাংবাদিকদের আরো জানান, আমার প্রশাসনের লোকবল অপ্রতুল। এই জেলাটি প্রথম শ্রেনির একটি জেলা আমার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে যেখানে ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকার কথা, সেখানে মাত্র ৬ জন রয়েছেন। এডিসি রেভিনিউ করোনাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট করোনা পজেটিভ। তারা কোয়ারাইন্টাইনে রয়েছে। ২ এডিসি পদ শূন্য। এই চরম সংকটে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাই আমাদের সাধ্যে যা আছে তাই নিয়ে সরকার ঘোষিত লকডাউন পুরোদমে বাস্তবায়ন করতে সেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি আমরা।
সর্বপরি একান্ত অত্যাবশকীয় না হলে কেউ ঘর থেকে বের হবেননা। আমাদেরকে সহযোগিতা করুন, দয়া করে ঘরে থাকুন সুস্থ্য থাকুন।