নিউজ ডেস্ক । বর্তমানকণ্ঠ ডটকম-
আসন্ন ঢাকা সিটি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই, ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেছেন, ‘প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও যারা নির্বাচনের সময় মোতায়েন থাকবেন ওনারা যাতে কোথাও আইনশৃঙ্খলা ব্যহত না হয় এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, তার জন্য সকল ধরনের আয়োজন রাখবে এবং পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেটার দিকেও উনারা খেয়াল রাখবেন। এ ব্যাপারে মাননীয় নির্বাচন কমিশনারগণ তাদেরকে নির্বাচনের পরিবেশ সঠিক রাখার জন্য এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন তার পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর যারা প্রধানগণ আছেন, তারা নিশ্চিত করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করেছেন এমন কোনো পরিবেশ সৃষ্টি হবে না যার কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারেন। সে জন্য কোনো আশঙ্কা নেই। ভোটের পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আছে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন।’
সচিব আরও জানান, ‘গোয়েন্দা বাহিনীর পক্ষ থেকেও আমাদেরকে বলেছেন যে, ভোট বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনো থ্রেট বা এই ধরনের কোনো আশঙ্কা উনারা এখন পর্যন্ত পাননি।’
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সভাশেষে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
প্রার্থীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আসন্ন ঢাকা সিটি উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে উপ-নির্বাচন ও নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীরা যাতে কোনো প্রকার গণ্ডগোল করতে না পারে সে জন্য আগে থেকেই তাদের মুভমেন্টগুলো ফলো (চলফেরা পর্যবেক্ষণ) করা হবে।’
সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছে যে, তারা করা নজরদারিতে রাখবেন। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থী যারা আছেন, তারা যাতে কোনো প্রকার গণ্ডগোল বা অন্যকোনো বিষয়ে চিন্তা না করতে পারেন। আগেই তাদের মুভমেন্টগুলো ফলো করা হবে। যদি সেরকম কোনো কিছু দেখে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নির্বাচন আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন এবং নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরবর্তীকালে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ২২ এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ২৭টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ১৮টি এবং র্যাবের মোবাইল টিম থাকবে ২৮টি এবং বিজিবির মোবাইল টিম থাকবে ২৭টি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পুলিশের মোবাইল ফোর্স থাকবে ৯টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ৬টি এবং র্যাবের মোবাইল টিম থাকবে ৯টি এবং বিজিবির মোবাইল টিম থাকবে ৯টি। এছাড়াও র্যাব এবং বিজিবির আলাদা ভাবে তারা কিছু মোবাইল টিম ওয়েটিংয়ে রাখবেন। প্রয়োজন হলে যাতে তারা মুভ করতে পারেন। ’
কমিশনের কিছু নির্দেশনার মধ্যে ছিল জানতে চাইলে সচিব বলেন, যেহেতু এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, বিগত আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবং এটা যেহেতু একটা মেগা সিটি এবং বিভিন্ন অঞ্চলের ভোটাররা এখানে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে। তারা যাতে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন। সে ব্যাপারে উনারা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
যেহেতু ঢাকা সিটিতে এটা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলেছেন, উনারা সর্বোচ্চ সমন্বয়ের মাধ্যমে যেহেতু হাতের কাছেই ভোটকেন্দ্র তারা সুন্দর সমন্বয় করে এই নির্বাচনটিকে তারা তুলে নিয়ে আসবেন বলেও জানান ইসি সচিব।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, মহাপুলিশ পরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, বিজিবি প্রতিনিধি, ডিজিএফআই পরিচালকসহ বিভিন্ন আইনরশৃঙ্খলাবাহিনীর প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।