নরসিংদী | বর্তমানকণ্ঠ ডটকম:
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩ বাংলাদেশির মধ্যে নরসিংদীর জাকারিয়া ভূঁইয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টায় পলাশ উপজেলার জয়পুরা গ্রামের ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে গত ২০ মার্চ স্বামীর মরদেহ আনতে নিউজিল্যান্ডে যান স্ত্রী রিনা আক্তার। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় স্বামী জাকারিয়ার মরদেহ নিয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামেন।
বিমান বন্দরে নিহত জাকারিয়ার বড়ভাই আলমগীর, বাবা আব্দুল বাতেন সহ আত্মীয়-স্বজনরা তার লাশ গ্রহণ করেন। সেখান থেকে রাত প্রায় দেড়টায় লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যানে করে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় পলাশ উপজেলার জয়পুরায় গ্রামের বাড়িতে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়। নিহত জাকারিয়াকে শেষবারের মতো দেখতে তার বাড়ি শত শত লোক ভিড় করে।
জানাজা নামাজে অংশ নেন নরসিংদী-৩ আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ।
গত ১৫ মার্চ দুপুরে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৪৯ জন মুসল্লি প্রাণ হারায়। তারমধ্যে তিনজন রয়েছেন বাংলাদেশের। এদেরই একজন নরসিংদীর পলাশের জাকারিয়া ভূঁইয়া। জাকারিয়া পলাশ উপজেলার জয়পুরা গ্রামের আব্দুল বাতেন ভূঁইয়ার ছেলে। দুই ভাই ও তিনবোনের মধ্যে জাকারিয়া চতুর্থ।
জাকারিয়ার বাবা আব্দুল বাতেন ভূইয়া জানান, দীর্ঘ ৮ বছর সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন নিউজিল্যান্ডের একটি কোম্পানীতে চাকুরি পান জাকারিয়া। আড়াই বছর আগে দেশে ফিরে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের ১৭ দিন পর নিউজিল্যান্ডে চাকুরিতে যোগদান করেন জাকারিয়া। সর্বশেষ ৬ মাস আগে দেশে ফিরে ৪০ দিনের ছুটি কাটিয়ে নিউজিল্যান্ডে যান তিনি। স্ত্রী রিনা আক্তারকেও নিউজিল্যান্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি শেষ করেছিলেন জাকারিয়া ভূঁইয়া।
নিয়মিত নামাজ আদায়কারী জাকারিয়ার মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা। কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছেন বাবা-মা, স্ত্রীসহ স্বজনেরা।
এদিকে বিদেশে কোনো বাংলাদেশি বৈধভাবে গিয়ে মারা গেলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে লাশ দাফন কাফনের জন্য বাংলাদেশের বিমান বন্দর থেকেই ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তারা সেই অর্থ না দিয়েই মরদেহটি হস্তান্তর করে দেয় বলে জানান নিহত জাকারিয়ার বড় ভাই আলমগীর হোসেন।