নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ ২০১৮ : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হয়ে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল আয়োজিত ‘এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশন অ্যান্ড কমপেটেটিভনেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট-২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
২৩টি উন্নয়ন সহযোগী দেশ, ৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ৪৭টি স্বল্পোন্নতদেশ নিয়ে ১৯৯৭ সালে এ অংশীদারীত্বমূলক কর্মসূচি শুরু হয়। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৩ লাখ মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, বাঙালি বীরের জাতি, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে জানে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু দুটি উদ্দেশ্য নিয়ে সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। একটি বাংলাদেশকে স্বাধীন করা, অপরটি বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করে গেছেন, আজ তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মুক্তির পথে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবার একধাপ এগিয়ে যাওয়া তারই প্রমাণ।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে তৈরি পোশাক শিল্পে শিশুশ্রম বন্ধ এবং রপ্তানিতে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আজ পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্যের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। যে সকল দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিশ্ব বাণিজ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতি বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের রপ্তানির সিংহভাগ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। শুধু একটি পণ্যের ওপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণ করতে হবে। এজন্য সরকার ইতিমধ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দেশের রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাজার সম্প্রসারণের ওপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করলেও আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত এলডিসিভুক্ত দেশের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবার পরও ইউরোপিয়ন ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে জিএসপি প্লাস নামে বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। বিশ্ব বাণিজ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার যোগ্যতা অর্জন করবে। তখন বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করতে জাতিসংঘের দেওয়া তিনটি শর্তই পূরণ করেছে, অর্থাৎ যোগ্যতা অর্জন করেছে। ফলে বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে, মর্মে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায় অতিক্রম করবে ২০২৪ সালে।
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসুর সভাপতিত্বে জাতিসংঘে নিযুক্ত এক্সক্লুসিভ সেক্রেটারিয়েট ফর ইআইএফএর নির্বাহী পরিচালক রত্মাকর অধিকারী, বিএফটিআই-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাবেক সচিব আলী আহমেদ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস পেসিডেন্ট বিজয় ভট্রাচার্য্য, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. মুনীর চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।