ঝিনাইদহে ক্রমেই অবনতি হচ্ছে ডায়রিয়া পরিস্থিতি। শুরুর দিকে জেলা শহরে সংক্রমণ বেশী হলেও বর্তমানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা আসছে সদর হাসপাতালে। চলতি মাসের ১৯ দিনে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৭২ জন। রোববার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে ১১৩ নারী পুরুষ ও শিশু। এরমধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক মাদ্রাসা ছাত্র। রোববার সকালে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে ডায়রিয়া রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। রোগীর তুলনায় বেড সংখ্যা কম থাকায় অনেকেই ফ্লোর ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। এদিকে জনবল সঙ্কটের কারণে রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।তবে পর্যাপ্ত খাবার স্যালইনসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর স্বজন সাইদুর রহমান জানান, দুই দিন আগে বড় ভাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে সদর হাসপাতালে আনলে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করি। এখন কিছুটা ভালো আছে। তবে, তার বাড়ির আশেপাশে আরো অনেকে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে যোগ করেন।
জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলা থেকে আশা হাসানুজ্জামান নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমাদের পরিবারেরই তিনজন অসুস্থ হয়েছে। পরশু রাতে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখনো সুস্থ হয়নি। কয়দিন থাকা লাগবে তা বলতে পারছি না।
শহরের কাঞ্চননগর এলাকার নারগিস নামের এক রোগী বলেন, হঠাৎ করে আমার ছেলের পাতলা পায়খানা শুরু হয়। তারপর আমার স্বামীর, পরে আমারও হয়েছে। কিসের জন্য হলো তা বলতে পারছি না। আমরা তো বাইরের খাবারও খাইনা। শুধু আমাদের পরিবারেরই না, বাড়ির আশপাশের অনেক লোকজনেরও হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জাকির হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ডায়রিয়া সংক্রমণ কমার কোন লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সংক্রমণের সঠিক কারন জানতে এবং চিকিৎসার সুবিধার্থে ঢাকা থেকে উচ্চতর গবেষক টিম এখানে আসা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে তারা ফলাফল জানালে চিকিৎসা প্রদান ও রোগ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।