বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন

টিকা ছাড়াই ৭১ ভাগ বস্তিবাসীর শরিরে এন্টিবডি

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৯ পাঠক
শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১

করোনা নিয়ে একটি কাজের কাজ করেছে আইসিডিডিআরবি। মহাখালীর কলেরা হাসপাতাল নামে যারা পরিচিত। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি ও পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের ৩২২০ জনকে পরীক্ষা করে তারা দেখেছে ঢাকার ৭১ ভাগ ও চট্টগ্রামে ৫৫ ভাগের মধ্যে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। (তথ্য সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর, ২৩ জুন) এর অর্থ হচ্ছে এ বস্তিবাসীরা করোনা জীবানুর সংক্রমনের শিকার হয়েছেন। যদিও গবেষণা বলছে তাদের মাত্র ৩৫ ভাগের মধ্যে করোনার মৃদু লক্ষন দেখা দিয়েছে। গবেষণার ফল অনুযায়ী যারা বারবার হাত ধুয়েছেন, মদ্যম কায়িক পরিশ্রম করেছেন, বিসিজি টিকা নিয়েছেন এবং নাক-মুখ কম স্পর্শ করেছেন তারা অধিক সুস্থ থেকেছেন।

আচ্ছা বস্তিতে কি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়? না সেটা সম্ভব? বস্তিতে মানুষজন মাস্ক পড়েনা। কাজে বের হলে ঠেকায় পড়ে অনেককে পড়তে হয়। একই মাস্ক মাসের পর মাস বস্তিবাসীরাসহ অনেকে ধুয়ে ব্যবহার করেন। বস্তিতে এসি নেই। এমনকি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য তারা খুব প্রয়োজন ছাড়া ফ্যান-লাইট ছাড়েন না। করোনা নিয়ে সমাজের উপর তলায় ও উচ্চ মধ্যবিত্ত পর্যায়ে যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা রয়েছে তা তাদের মধ্যে নেই। তাই তারা করোনায় প্রকটভাবে আক্রান্ত হননি বললেই চলে। মৃদু আক্রান্ত হয়ে তাদের মধ্যে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে।

আইসিডিডিআরবির এ গবেষণা প্রমান করে করোনা নিয়ে এত আতংকের কিছু নেই। (বস্তির মানুষ করোনা নিয়ে আতংকিত না।) মাস্ক জরুরি কিছু না। (বস্তিতে মানুষ মাস্ক ব্যবহার করে না।) করোনার টিকা ছাড়াও মানুষের মধ্যে এন্টিবডি তৈরি হতে পারে। মানুষ সুস্থ থাকতে পারে। ( বস্তিতে তাই হয়েছে) ।

বস্তিবাসীর মধ্যে যেমনিভাবে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে সমাজের অন্যান্য মানুষের মধ্যে কি তা হয়নি? নিশ্চয়ই হয়েছে। এজন্য টিকা দেয়ার আগে ব্যাপকভাবে এন্টিবডি টেষ্ট করা প্রয়োজন। টিকা দেয়া হয় শরিরে এন্টিবডি তৈরি করার জন্য। সত্তরভাগের বেশি এন্টিবডি তৈরি হলে হার্ড ইমিউনিটি তৈরী হয়ে যায়। তখন লকডাউনের প্রয়োজন থাকেনা। (কারো কারো মতে ৮০ ভাগের এন্টিবডি তৈরি হতে হবে, হার্ড ইমিউনিটির জন্য)। তাই সরকারের উচিৎ ব্যাপভাবে এন্টিবডি টেষ্ট এর ব্যবস্থা করা।

হার্ড ইমিউনিটি তৈরীর জন্য জন সমাগম রোধ করা নয়, বরং জনসমাগমই প্রয়োজন। জনসমাগম বা ঘিঞ্জি পরিবেশই যদি ঝুঁকিপূর্ন হতো তাহলে বস্তিতে করোনায় ব্যাপক প্রাণহানী ঘটতো। গার্মেন্টস শ্রমিকসহ বিভিন্ন ধরনের শ্রমিকদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হতো।কিন্তু তা হয়নি। রোজার ঈদের সময় ঢাকা থেকে সাড়া দেশে মানুষ আসা যাওয়া করলে অনেকে বলেছিলেন ঈদের পরে সারাদেশে করোনা ছড়াবে। তা হয়নি। বরং সীমান্ত সংলগ্ন স্থানে নতুন ভ্যারিয়েন্টের আক্রমণ হয়েছে।

তাই লকডাউন, মাস্ক এসব নিয়ে মৌলবাদীদের মতো বসে না থেকে আইসিডিডিআরবির মতো গবেষণা করে করোনা মোকাবেলার পলিসি ঠিক করা প্রয়োজন। তবে মনে হয় না সেটা হবে। কারণ করোনা নিয়ে আতংক জিইয়ে রাখলে ওষুধ, ভ্যাকসিন, চিকিৎসার ব্যাপক ব্যবসা হবে। যার সাথে দেশী-বিদেশী রাজনৈতিক নেতা, এনজিও, ডাক্তার, আমলা, মিডিয়া মালিক রয়েছে। ফলে করোনার নামে ব্যবসা-শোষন থেকে আমাদের সহজে মুক্তি নেই।

লেখক – সাধারণ সম্পাদক, প্রেস ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই পাতার আওর সংবাদ