রাজবাড়ীর কালুখালীতে গৃহবধূকে উত্ত্যক্ত করায় গরু ব্যবসায়ীকে মেরে লাশ বসতবাড়ির গোয়ালঘরে পুঁতে রাখেন স্বামী-স্ত্রী। শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের বড়পাতুরিয়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত গরু ব্যবসায়ীর নাম হাবিবুর রহমান খান (৬০)। তিনি পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের পূর্ববাগদুলী গ্রামের মৃত আবদুল হাকিম খানের ছেলে। অভিযুক্ত দম্পতি সিদ্দিকুর রহমান ও নার্গিস বেগম পার্শ্ববর্তী কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের বড়পাতুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান খান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর গৃহবধূকে তার বসতবাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এর আগেও তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তিনি। এ ঘটনা গৃহবধূ তার স্বামীকে জানাই। এরপর তারা পরিকল্পনা করে হাবিবুর রহমানকে তাদের বাড়িতে আসতে বলে।
হাবিবুর রহমান এসে ঘরে ঢুকলে তাকে প্রথমে ধারাল একটি অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর স্বামী-স্ত্রী দা ও কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে লাশটি পলিথিনে মুড়িয়ে গোয়ালঘরে গর্ত খুঁড়ে মাটিচাপা দেয়।
থানা পুলিশ আরও জানায়, হাবিবুর রহমান খান একজন গরু ব্যবসায়ী। গত বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই-বাছাই করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ধর্ষণ চেষ্টার দায়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তারা।
হাবিবুর রহমান খানের ছেলে চাঁদ খান বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে বাবা বাড়ি থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গরু কেনার উদ্দেশে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। এক পর্যায়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় কালুখালী থানায় একটি জিডি করি। পরবর্তীতে পুলিশ অনেক খোঁজাখুঁজির পরে শনিবার তার লাশ উদ্ধার করতে পেরেছে।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, হাবিবুর রহমান খানের পরিবার কালুখালী থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। পরে আমরা তার মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে সিদ্দিক মণ্ডল ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন।
তাদের দেওয়া তথ্য মতে, সিদ্দিক মন্ডলের নিজ বাড়ির গোয়ালঘরের মধ্যে পুঁতে রাখা অবস্থায় অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করলে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।