নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, বৃহস্পতিবার, ১২ এপ্রিল ২০১৮: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকাররি চাকরির কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণায় বিএনপির ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকারের পরাজয় নয় বরং সরকারের জয় হয়েছে। যারা আন্দোলন করেছে তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবি হাতে নিয়ে জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে কোটা বাতিলের কথা বলেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামাত তাদের পেট্রোল বাহিনীকে কোটা আন্দোলনের ঢুকিয়েছিল দাবি করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, আপনার সবাই গতকাল দেখেছেন এবং শুনেছেন তারেক রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক মামুনের সাথে কথা বলেছেন। তিনি ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছেন কিভাবে এই আন্দোলনে একটু বাতাস দেয়া যায়। সেটা চেষ্টা করার জন্য। তখন মামুন সাহেব বলছেন, সেটা আমরা আগে খেয়াল করিনি আপনি বলার পরে এটা আমাদের নজরে এসেছে। অর্থাৎ এ আন্দোলনে বাতাস দিব। আমি মনে করি মামুন সাহেবকে গ্রেফতার করা প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে কারা হামলা চালিয়েছে এই মামুনকে গ্রেপ্তার করা হলে এই তথ্য দিতে পারবেন। তারেক রহমান ইনস্ট্রাকশন দেয়ার পড়ে সম্ভবত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চালানো হয়েছে।
মওদুদ আহমেদ সাহেবরা বিএনপি তারা কোটা অন্দোলনকে পুঁজি করে দেশ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, তারা দেশের মাটি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে অর্থাৎ তাদের রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মাধ্যমে।
কোটা বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে সবসময় ছিল জানিয়ে সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার সবসময় হয়ে আসছে। কোটা সংস্কার ভবিষ্যতেও হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন এবং সেই সাথে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আলাদা বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে ঘোষণা দিয়েছেন তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির গণবেদনা সেখানেই, তারা সব আন্দোলনে ব্যর্থ। তারা একটি পরগাছা দল। যখন তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি নামে আন্দোলন করা হলো তখন সেই কমিটিতে বিএনপি শরিক হয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা করছিল। সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তারা নিজেরা বহু আন্দোলন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া তার নেতাদের বিশ্বাস করে না, নেতাদেরকে তার কর্মীদের বিশ্বাস করে না। তাই তাদের ডাকে কেউ সাড়া দেয় না। বিএনপির সব কিছু ভেসে গেছে, তাই অন্যরা কিছু করলে সেখানে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। বিএনপি সবকিছু ভেসে চলে গেছে। বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে আছেন। তাদের বড় বড় নেতাদের দুর্নীতির দায়ে দুদক তলব করেছে। তাদের রাজনীতি বানের পানির মত ভেসে গেছে। এখন শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন করছে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে সেখানে আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করছেন বিএনপি। কিন্তু সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মাধ্যমে বিএনপি যে ষড়যন্ত্র করেছিল এই রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে।
সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখানে যে দাবি জানানো হয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি মামলা প্রত্যাহার করার দাবি রয়েছে। তাহলে কি ভিসির বাসভবনে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিচার হবে না? আমি বরং সরকারকে অনুরোধ জানাব এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করা হোক। সেই সাথে জড়িতদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোটা পদ্ধতি সংরক্ষণ বা কোটা পদ্ধতি বাতিলের কোনটাতে নাই। তাহলে কেন তার বাসভবনে হামলা চালানো হল? নিশ্চয়ই শিক্ষকদের একটি অংশ এর সাথে জড়িত থাকতে পারে। তাদেরকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মায়ের মৃত্যুতে তিনি শোক প্রকাশ করে ও সমবেদনা জানান।