ফরিদপুরের মধূখালী উপজেলায় বর্ষা মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাট জাগ দিতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল পাট চাষিদের। পরবর্তীতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় সেই সমস্যা কেটে যায়। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর পাটের ফলন যথেষ্ট ভালো হয়েছে। বাজারে নতুন পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এতে বেশ আনন্দিত পাট চাষিরা।
নসিমন, ভ্যানে, মিনিট্রাকে করে বাজারে পাট নিয়ে যাচ্ছেন পাট চাষিরা। গত কয়েক বছর ধরেই পাটের দাম খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। এর মধ্যে গত বছর শেষের পাটের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়।
মধুখালী বাজারের পাট ব্যবসায়ী মো: পান্নু মোল্যা বলেন মিলে প্রতিনিয়িত পাট নিলে পাটের দাম থাকবে। মিল মালিকরা পাট ক্রয় কমিয়ে দিলে দাম কমে যাবে। পাট কাটা মৌসুমের শুরুতেই পাটের দাম চড়া ছিল। পরে কমে বিক্রি হয় ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ২শ টাকা দরে। বর্তমানে এটি ৩ হাজার থেকে ৩হাজার ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অনেক চাষী আরও বেশি দামের আশায় পাট স্টক করেছেন।
পাট চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাট চাষ করে তিন মাসের মধ্যে পাট ঘরে তোলা যায়। কম সময়ে, কম পরিশ্রমের ফসল পাট। প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ১০/১২ মণ পাট উৎপাদন হয়।
আড়পাড়া ইউনিয়নের পূর্ব আড়পাড়া গ্রামের পাট চাষি মো: আকরাম শেখ জানান, ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে তার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। ওই জমিতে ২৫ মণ পাট হয়েছে। কয়েকমণ পাট ২ হাজার ৮শ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। আরও দামের জন্য কিছু পাট ঘরে রেখে দিয়েছেন।
উপজেলার মেগচামী গ্রামের চাষী মো: জিন্না মিয়া জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার টাকা। ২ বিঘা জমিতে প্রায ১৮ মণ পাট হয়েছে। তিনি সেই পাট বাজারে নিয়ে প্রতিমণ ২ হাজার ৮শ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এতে তার অনেক লাভ হয়েছে। কম খরচে, কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় খুব খুশি তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলভি রহমান বলেন, চলতি বছর ৮ হাজার ৩ শত ৫২ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৫ শত ৫৩ হেক্টর। ভাল বীজ ও অনুকূল পরিবেশ থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ শত ১ হেক্টর জমিতে বেশি পাট চাষ হয়েছে। দামেও কৃষকরা খুশি রয়েছেন। পাটের দাম এ রকম থাকলে আগামী বছর কৃষকরা আরও ব্যাপকভাবে পাট চাষে উদ্বুদ্ধ হবেন। এ বছর মধুখালী উপজেলায় প্রায় ১৮হাজার ৭৩১.০৭ মেট্টিক টন পাট উৎপাদন হয়েছে।