ডেস্ক রিপোর্ট:
রাণীনগরে শতাধিক প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলাতে মোট ১৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সরকারি ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের স্মরণে নেই কোন শহীদ মিনার।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাতে মোট ১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১১টি বিদ্যালয়ে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার। অবশিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিশুরা শহীদ মিনারের ইতিহাস ও তাৎপর্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর।
অপরদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাতে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মোট ৪৪টি। এর মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩১টি। যার মধ্যে ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। কারিগরি কলেজ রয়েছে ২টি যার একটিতেও শহীদ মিনার নেই। অপরদিকে মাদরাসা রয়েছে ৭টি যার মধ্যে ৪টিতে কোন শহীদ মিনার নেই।
শহীদ মিনার বঞ্চিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর নিজস্ব উদ্যোগে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয় আবার কোন কোন বিদ্যালয়ে এই দিবসটিকে পালনও করা হয় না। এছাড়া অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে বা শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে মাইলকে মাইল পথ প্রভাত ফেরির জন্য খালি পায়ে হেঁটে নিয়ে যাওয়া হয় ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন।
উপজেলার বালুভরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গুলসান আরা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। একুশে ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপজেলা পরিষদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যেতে হয়। তাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার শামছুজ্জামান বলেন, মুজিববর্ষে সকল প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আর যে সব বিদ্যালয়ে এখনো সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ করা হয় নাই সেসব বিদ্যালয়ে সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ করে শহীদ মিনার নির্মাণ করারও পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, সরকারি কোন বরাদ্দ না থাকায় কিছু কিছু মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনোও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় নাই। তবে উপজেলা প্রশাসনের কাছে এডিবির যে বরাদ্দ এসেছে সেখানে যদি শিক্ষা বিভাগের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয় তাহলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মুজিববর্ষেই অবশিষ্ট সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার নির্মাণ করার জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে উপজেলার শহীদ মিনার বঞ্চিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।