বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগ এক ক্ষমতা এক নেতৃত্বে বিশ্বাসী: ফখরুল

নিউজ ডেস্ক | বর্তমানকণ্ঠ ডটকম- / ৬৭ পাঠক
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার নিয়ে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে আমরা লজ্জিত। দেশে এখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা নেই। রিপোর্ট প্রকাশের পরে আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের মতো বানোয়াট কথা বলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেরা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতেই বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিএনপি সাবেক মহাসচিব মরহুম কেএম ওবায়দুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ’৭১ থেকেই এক ক্ষমতা এক নেতৃত্বে বিশ্বাস করেন তারা। সচেতনভাবে তারা দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে।

তিনি বলেন, গোটা দেশ আজ কারাগারে পরিণত হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানর মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগ সবাইকে ছোট করে দেখাতে পছন্দ করে। তারা কাউকে সম্মান দিতে জানে না। তাজউদ্দিন আহমেদ, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাম মুখেও নেয় না।

আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার পুরনো স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সচেতনভাবে বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্র সরিয়ে ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ, একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামো রাখতে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকার হটাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নির্মাণে যেসব মানুষ অবদান রেখেছে তাদেরকে স্মরণ করা হয় না। তাদের নামগুলো পরিকল্পিতভাবে ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তাদের হীনমন্যতার কারণে শুধুমাত্র একজনকেই প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

দলের সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমানকে স্বরণ করে তিনি বলেন, আজ আমরা যেসব কথা বলছি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, ন্যায় নীতি, অর্থনীতির বৈষম্য দূর করে যথাসাধ্য সাম্য প্রতিষ্ঠা করা, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ছিল কেএম ওবায়দুর রহমানের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন আজ ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। যে দেশে গণতন্ত্র নেই সে দেশে মানবাধিকার থাকতে পারে না। দেশের মানবাধিকার নেই সেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

তিনি বলেন, মাত্র কয়েকজন লোক দেশের সম্পদকে লুট করে বিদেশে পাচার করছে। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি, ব্যাংক লুটপাট, রিজার্ভ লুটপাট করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জনগণকে বাদ দিয়ে অব্যাহতভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখার রাজনীতি সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ। সংবিধানকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে তারা। জনগণকে বাইরে রেখে সংবিধানের কথা বলা তাদের মুখে শোভা পায় না। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ভোগ করছে তারা।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে জনগণ বলে কোন শব্দ নেই, দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে। আর এজন্য সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করেছে। কোনও আলোচনার সুযোগ নেই, রাস্তা দখল করে ফয়সালা হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত জনগণ রাজপথ ছাড়বে না।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ. স. ম. আব্দুর রব বলেন, যুবকদের এখন লড়াই করার সময়। ছাত্রলীগের নেত্রীরা এখন গরু চোরের সর্দার। আওয়ামী লীগ ভোটে বিশ্বাস করে না। ক্ষমতা মাটিতে পরে থাকবে তবু আওয়ামী লীগকে থাকতে দেয়া হবে না। এ লড়াই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের লড়াই। ব্যাপক গণঅভ্যুত্থান, গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের বিদায় হবে।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত চিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম।

আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসলাম মিল্টন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ নেছারুল হক, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *