বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন

জীবন নিয়ে নতুন করে ভাবুন

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ১৮১ পাঠক
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক, বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, রবিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮:

পারফেকশনের চাহিদা কাজে ঢিলেঢালা ভাব নিয়ে আসে। সবকিছু ঢিমেতালে আগায়। আপনি হয়ত মনে করেন আপনার জীবনে আপনার যেখানে থাকা উচিৎ ছিল আপনি সেই পজিশনে নেই— সে কারণে আপনি হতাশ। আপনার ক্যারিয়ার, আপনার পরিবার, আপনার অর্থ-সম্পদের পরিমাণ সব মিলিয়ে ঝুঁকি নেওয়ার সুযোগ নেই আপনার। আপনি শুধু সুখী হতে চান।

তবে নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া আপনার জন্য প্রয়োজন। সমস্যা আপনি নিজেই। আপনার নিজের সুবিধাজনক অবস্থান থেকে আপনাকে বের হয়ে আসতে হবে। এইসব কারণে আপনি পিছিয়ে আছেন:
গতানুগতিক ভয়: আপনি হয়ত নিজের ব্যবসা শুরু করার স্বপ্ন দেখেন। আপনার অপছন্দের একঘেয়ে চাকরিটি ছেড়ে দিয়ে নিজেই কিছু করার উদ্যোগ নিতে চান। তবে আপনি ভয় পান। ভয় আপনার স্বাভাবিক অক্ষমতা। দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন। বড় করে একটা নিঃশ্বাস নিন। বাস্তবে আসুন। ভয়টাকে অনুভব করুন, এটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিন, এবং যে কোনো ভাবেই হোক আপনি যা চান সেটা শুরু করে দিন।

পরামর্শ গ্রহণ করার ব্যর্থতা: আপনি উপদেশ শুনতে পছন্দ করেন, কিন্তু কখনো সেটা গ্রহণ করেন না। আপনি ভান ধরে থাকেন যে কোনো নির্দেশনা শুধু শুনলেই তাতে কাজ হয়। সেটা কখনোই না। আপনি নিজেকেই বোকা বানাচ্ছেন। কাজ নিজে নিজে হয় না। উপদেশ বা পরামর্শ শুনুন। সেটা হজম করুন। তারপর অনুসরণ করুন।

দিকনির্দেশনা না থাকা: আপনি যেটা করেন, সেটার মতই গুরুত্বপূর্ণ হল আপনি কীভাবে কাজটা করেন। আপনি যেখানে যেতে চান সেখানে যাওয়াটা নির্ভর করছে আপনি কীভাবে কাজটা করেন তার উপর। আপনার লক্ষ্যগুলি কী? আপনি সেখানে যাওয়ার জন্য কী কী করছেন? আপনি উড়ে উড়ে সফলতায় পৌঁছাবেন না। সফল হতে হলে আপনার একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও একটা পরিকল্পনা থাকতে হবে।

অগ্রগতি পরিমাপ না করা: আপনি আপনার অগ্রগতি মাপছেন না। আপনি যদি সেটা পরিমাপ না করেন, আপনি কীভাবে উন্নতি করবেন? আপনি বুঝতে পারবেন না আপনি উন্নতি করছেন। আর এতে আপনার মনে হবে আপনি আগাচ্ছেন না। আপনি আপনার অগ্রগতি পরিমাপ করছেন না মানে আপনার সম্ভাবনা ও পরিকল্পনাগুলিও আপনার পরিমাপ করা নেই।

পারিপার্শ্বিক মানুষজন: আপনার আশেপাশে যদি নিরুৎসাহিত করে বা আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয় এমন লোকজন থাকে তাহলে আপনি কখনোই আপনার মধ্যে থাকা সম্ভাবনা বিকশিত করতে পারবেন না। লক্ষ্য অর্জনে আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে এমন মানুষজন খুঁজে বের করুন। যেসব মানুষ ইতিবাচক চিন্তা করে এবং সীমাবদ্ধতাকে চ্যালেঞ্জ করে তাদের সাথে সময় কাটান। তারা আপনাকে উদ্বুদ্ধ করবে।

নেতিবাচক বিশ্বাস ও আত্মবিশ্বাসের অভাব: ‘আমার যথেষ্ট যোগ্যতা নেই’— এই কথা আপনার মাথায় ঘুরছে। আপনার যদি নিজের যোগ্যতা ও নিজের দক্ষতায় বিশ্বাস না থাকে, তাহলে অন্যদের থাকবে এই আশা করেন কীভাবে? আপনি যে কাজ করেন সেখানে ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণ করুন ও সেগুলি সেলিব্রেট করুন। এটা আপনার প্রাপ্য। বিশ্বাস করুন এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আত্মবিশ্বাস আরো আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেয়। এর ফলে আপনি আপনার নেতিবাচক বিশ্বাসকে তাড়াতে পারবেন।

পারফেকশন বা নিখুঁতের ফাঁদে পড়া: আপনি মনে করেন, সবকিছুকে পারফেক্ট হতে হবে। যদি পারফেক্ট বা নিখুঁত না হয়, আপনি এটাকে ফেলে দেন। পারফেকশনের চাহিদা কাজে ঢিলেঢালা ভাব নিয়ে আসে। সবকিছু ঢিমেতালে আগায়। আর এই ঢিমেতাল একটা স্বপ্নকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। পারফেক্ট টাইম বা উপযুক্ত সময় পাওয়ার আশায় সময় নষ্ট করবেন না। পারফেক্ট টাইম কোনোদিন আসবে না, বিশ্বাস করুন। কাজ শুরু করে দিন।

অযৌক্তিক যুক্তি খোঁজা: আপনি মনে করেন যে আপনি যেসব কারণে কাজ শুরু করছেন না সেগুলি কোনো অজুহাত না, সেগুলি আসলেই যৌক্তিক কারণ। কারণ বা যুক্তিগুলি যতক্ষণ আপনাকে দমিয়ে রাখছে বা কাজ শুরু করতে দিচ্ছে না ততক্ষণ সেগুলি অজুহাতই। এই অযৌক্তিক যুক্তি ব্যবহার বন্ধ করুন। সাহস করে সামনে আগান।

কারো সম্মতির আশায় বসে থাকা: আপনি কারো অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছেন। আপনি যা চান তা শুরু করতে আপনার অনুমতির প্রয়োজন কেন? আপনি যা হতে চান তার জন্য কারো সম্মতির প্রয়োজন কেন? কেউ একজন আপনাকে বৈধতা দিবে এবং আপনাকে শুরু করতে বলবে— এই অপেক্ষা করা বন্ধ করুন। আপনার যদি অর্জন করার মত কোনো লক্ষ্য থাকে তাহলে কখনোই কারো সম্মতির ভরসা করা উচিৎ না আপনার।

আপনি কি আদৌ কোনো ভার বহন করেন: সাহস এবং সৃষ্টিশীলতা অনেকটা পেশীর মত। এবং আপনার পেশী দুর্বল হয়ে গেছে। আপনি যখন প্রতিদিন কোনো কাজ করেন এবং কিছু তৈরি করেন, আপনি ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনার মাসল বা পেশী তৈরি করেন। হ্যা, আপনি ভুল করতে পারেন, এবং এই ভুলের মাধ্যমেই আপনার মাসলের জন্য প্রয়োজনীয় স্কার টিস্যু তৈরি হয়।

কিছু তৈরি করা, ব্যর্থ হওয়া, আবার তৈরি করা, আবার ব্যর্থ হওয়ার এই অভ্যাস আপনাকে একসময় ব্যর্থতা-প্রতিরোধী করে তোলে। এটা আপনাকে জড়তা ভাঙতে সাহায্য করে। এর ফলে সফলভাবে যে কোনো কিছু তৈরি করাটাই হয়ে যাবে আপনার গতানুগতিক অভ্যাস।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *