বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

“বাজেট সভা” শব্দযুগলটি ও এর সময়কাল পরিবর্তন হওয়া জরুরি

মোশাররফ হোসেন মুসা / ৭৬ পাঠক
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

প্রতি বছর বাজেট সভা অনুষ্ঠিত হয় জুন মাসে। সেই বাজেট ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকে। এ নিয়মটি বৃটিশ আমল থেকে শুরু হয়। কিন্তু খোদ ইংল্যান্ডে এপ্রিল মাস থেকে বাজেট বর্ষ শুরু হয়েছে বহু আগেই। দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে জুলাই-জুন হিসেবে বাজেট করা হয়। বহু দেশ নিজ দেশের আবহাওয়ার সাথে মিল রেখে বাজেট বর্ষ নির্ধারণ করেছে ৷ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এপ্রিল মাস থেকে বাজেট বর্ষ শুরু হয়। বহু দেশে বর্ষপঞ্জি হিসেবে অর্থ বছর নির্ধারিত হয়েছে; যেমন-অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, চীন,পুর্তুগাল, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া সহ প্রায় ৫০টি দেশে খ্রীস্ট বর্ষ, তথা জানুয়ারি- ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কে অর্থবছর করেছে । বাংলাদেশে আবহাওয়া সাথে মিল রেখে বাংলা বৈশাখ- চৈত্র হিসেবে এপ্রিল-মার্চ পর্যন্ত সময়কালকে অর্থ বছর করা যেতে পারে। সকলের জানা রয়েছে- মে, জুন ও জুলাই মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় বেশি এবং এ সময়কে বর্ষা মৌসুমও ধরা হয়।

অর্থ বছর জুন মাসে শেষ হয়ে যাওয়ায় তড়িঘড়ি করে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করা হয়। একদিকে বৈরি পরিবেশ এবং অন্যদিকে সময়ের স্বল্পতা সব মিলিয়ে প্রকল্পগুলোর কাজ নিম্নমানের হয়ে যায় । এমনও দেখা গেছে, জুন মাসে কাজ শেষ না হওয়ায় অডিট আপত্তি ঠেকাতে অফিসের বড়কর্তা ঠিকাদারের বিল অন্যত্র সরিয়ে রাখেন এবং কাগজ-পত্রে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হয়েছে দেখিয়ে থাকেন । সেসব অসমাপ্ত কাজ জুলাই মাসে বর্ষার মধ্যে সম্পন্ন করতে করতে দেখা যায়।

আবার “বাজেট” নামটি নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সংবিধানে “বাজেট” শব্দটি নেই। সংসদের কার্য প্রণালি বিধির ১১১(১)-এ বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিতে “বাজেট” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ( এ বিষয়ে ফখরুল ইসলাম গত ২৫ মে ২১ তারিখে প্রথম আলোতে সংবিধানে বাজেট নেই, আছে কোথায় শীর্ষক এক কলামে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন)। একই কারণে “বাজেট সভা” শব্দযুগলের পরিবর্তে বাৎসরিক আয়-ব্যয় সভা অথবা বার্ষিক আর্থিক সভা কিংবা বাজেট বর্ষ সভা নাম ব্যবহার করা যেতে পারে।

লেখক :- গণতন্ত্রায়ন ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ক গবেষক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *