বিনোদন ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭: প্রেম করলেও বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করা যাবে না, ভালবাসার কারণে অন্যদের মনে দুঃখ দেয়া যাবে না, প্রেমিকার প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে, ভালবাসার মানুষকে নিয়ে কান কথায় কান দেয়া যাবে না, কিংবা সম্পর্কের প্রতি উভয়ের সমান শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।
ধরে নিন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের কোনও একটি রোমান্টিক সিন দেখার পর একজন কল্পিত পাঠক এমন করেই ভাবলেন। তিনি নিজেও হয়তো একজন প্রেমিক। ভাবতে ভাবতে মনের অজান্তে হয়তো শাকিব কিংবা অপুকে নিয়ে ওই পাঠকের মনে এক ধরনের আস্থা ও বিশ্বাসও জন্মে গেল। নিজের কল্পলোকে দূর থেকেই বহুদিন ধরে এই জুটির প্রতি তার অন্ধ ভালোবাসাও তৈরি হলো।
হওয়াটাই কি স্বাভাবিক নয়! দেশের একজন নামিদামি তারকা কিংবা খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বরা তো সাধারণ মানুষের কাছে অনুস্মরণীয়, অনুকরণীয় হয়ে উঠেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের খেটে খাওয়া একজন শ্রমিকও হয়তো সিনেমার শাকিবের স্টাইলে কপালের ঘাম মুছতে চায়। কিংবা কোনও গৃহিণীও হয়তো আয়নার সামনে অপু বিশ্বাসের মতো সাদা শামুকের হাসি ছড়াতে চান। ক্রমে তাদের কাছে অপু-শাকিবরা অতিমানুষেও পরিণত হন কখনও কখনও।
কিন্তু সেই মানুষটি যখন তার প্রিয় নায়ক কিংবা নায়িকার ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য শোনে এবং যখন জানতে পারে তাদের অনৈতিক কার্যকলাপ তখন তার আস্থা কতটা অটুট থাকে। বরং প্রিয় সেই নায়ক নায়িকার প্রতি কি তার ঘৃণার উদ্রেক হয় না! নিশ্চয় হয়!
গত এক দশক ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। তারা দুজনই অবিবাহিত- গেল এপ্রিলের আগ পর্যন্ত বিনোদন দুনিয়া এমনটিই জানতো। কিন্তু তারা যে শুধু বিবাহিতই নন, তাদের ঘরে যে এক সন্তানও আছে সেটি জানার পর ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। অপু বিশ্বাসের সব সত্যি ফাঁসের পর এ নিয়ে তোলপাড় কম হয়নি।
যদিও শাকিবের পক্ষ থেকে একটু দেরিতে হলেও বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছিল। তবে অপুর সত্য প্রকাশের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে ঝড় নেমে আসে। শাকিব কোনওভাবেই চাচ্ছিলেন না অপু আবারও সিনেমায় ফিরুক, অপুও বিয়ে করেছেন বলে নিজের ক্যারিয়ারটা ঘরবন্দিত্বে আবদ্ধ করতে রাজি নন। শাকিবের পরিবারের সঙ্গেও অপুর ভালো বনিবনা হচ্ছিল না। এসব নিয়েই চলছিল সাংসারিক জটিলতা।
এরই মধ্যে সোমবার খবর প্রকাশ হলো- অপুকে তালাকনামা পাঠিয়েছেন শাকিব খান। খবরটি প্রকাশের পর হাজারো ভক্ত-অনুরাগীর মধ্যে এই জুটিকে নিয়ে বাজে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনেকেই তো তাদের এই কার্যকলাপকে অসংখ্য সিনেমাপ্রেমিদের সঙ্গে প্রতারণারও শামিল বলে মন্তব্য করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা।
তবে আমরা যদি আমাদের সেই কল্পিত পাঠকের কথা ধরি তাহলে বলতেই হবে- শুধু নিজেদের সম্পর্কের সঙ্গে নয়, শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস গোটা দেশের সঙ্গেই এক ধরনের প্রতারণা করেছেন! কেননা, যে অভিনেতা কিংবা অভিনেত্রীকে এতদিন মানুষ ভালোবাসা, বিশ্বাস, আস্থার আসনে প্রতিস্থাপন করেছিলেন সেই তাদের এমন বাজে ব্যক্তিজীবন নিশ্চিয় একজন ভক্তকে দারুণভাবে পীড়া দেবে। আর গণনায় শাকিব-অপু জুটির ভক্ত তো দেশে একেবারে কমও নয়। তাই তাদের এই গোপন বিয়ে, গোপনে সন্তান জন্মদান ও অবশেষে প্রকাশ্যে ডিভোর্স এ সবকিছুই ভক্ত-অনুরাগীদের অকৃত্রিম ভালোবাসার মূলে প্রতারণার কুঠারাঘাত নয় কি?