শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যবেক্ষণ

হ্যারি সেলডন, যুক্তরাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক। / ১০৭ পাঠক
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন কাজ পেয়েছি আর তা হচ্ছে ওয়ার্ল্ড মিলিটারি পর্যবেক্ষণ করা, জাতিসংঘ পর্যবেক্ষন করা এবং আই.এম.এফ এর সাথে সম্পৃক্ত থাকা। বলাবাহুল্য অন্য দুটির সাথেও সম্পৃক্ত থাকার। তাই বলা হচ্ছে আমার লেখা-লেখি সংযত/নিয়ন্ত্রিনে রেখে চলা অর্থাৎ পেশাদারি কাজ ও গবেষণা সম্পৃক্ত কারন উক্ত কাজ/দায়িত্বের জন্য আমাকে বাৎসরিক হারে কিছু সম্মানি অর্থ প্রদান করা হবে এবং ইতিমধ্যে বলেছি যে কিছু অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে সেটা এই কাজেরই অংশ যদিও কবে নাগাদ তা আমার ব্যবহার যোগ্য হয়ে উঠবে জানি না।

ওকে ফাইন। ঐসব আলতু-ফালতু লেখা না লিখলে আমার কিছু যায় আসে না আর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো সেইসব লিখতেও চাইনে কিন্তু অবস্থা প্রেক্ষিতে আমি নিরুপায়। আমাকে লিখতেই হতো।

যাইহোক, আশা করবো এটাই আমার শেষ লেখা হবে এবং আমার কাজ ও গবেষণা সম্পৃক্ত লেখালেখির জন্য উপযুক্ত কোন প্লাটফর্ম খুঁজে পাবো অন্যদের বা কর্তৃপক্ষের সাথে শেয়ার করবার জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা-বানিজ্যের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি ব্যবসা/বানিজ্যকে প্রথমে অর্থাৎ সরকার ‌ডোমেইনের আগে স্থান দেয়া হয়ে থাকে।‌ সরকারের কোষাগারে অনেক অর্থ-সম্পদ রয়েছে এবং সরকারী/সামরিক ব্যাক্তিদের মধ্যেও ধনী ব্যাক্তিবর্গ রয়েছে কিন্তু সচারচার ধনীক শ্রেনী দেখতে পাই ব্যবসা-বাণিজ্য সেক্টরে, ব্যবসায়ীগন।

ধনীক শ্রেনী হচ্ছে অর্থনীতির মেরুদণ্ড এটা মনে রাখবেন।‌ কারন ধনীরাই অর্থ ও সম্পদের ভ্যালু সৃষ্টি করে থাকেন এবং তিনি ধনী হয়ে ওঠেন। প্রতিটি ধনী ব্যক্তি হচ্ছে অর্থনীতির এক একটি স্তম্ভ।‌ কৃষক, শ্রমিক এবং কর্মী বাহিনী তারা সকলেই মানুষের বেঁচে থাকার খাদ্য, জীবন যাপনের ভোগ্যপণ্য এবং ভোগবিলাসের জন্য দ্রব্যাদি উৎপাদন করে থাকেন যা অর্থনীতির চক্রে আবদ্ধ হয় এবং সেই অর্থনীতির নিয়মিত ও চুড়ান্ত ভোক্তা হচ্ছে ধনীক শ্রেনী। যদি ধনীক শ্রেনী না থাকে তবে অর্থনীতি ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে, মানুষ বেচে থাকবার নিমিত্তে মৌলিক চাহিদা সম্পন্ন বস্তুসমুহের আদান প্রদান করবে মাত্র যার ফলে মানব সভ্যতা ও মানবতা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। সেই সাথে অর্থ-সম্পদের সুষম বন্টন ও ন্যায্য অধিকারও গুরুত্বপূর্ণ সমান বটে। কারন যে ভিত্তির উপরেই ভর করে অর্থনীতি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে সেখানেও স্থিতাবস্থা প্রয়োজন রয়েছে।

সুতরাং ব্যবসা-বানিজ্য ও শিল্পের নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন ও বিকাশ হওয়া প্রয়োজন। প্রতিনিয়ত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে গবেষণা ও আবিষ্কার মানব সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করছে। বিনোদন, গনমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম এবং যোগাযোগের সকল মাধ্যমের নতুন ক্ষেত্র ও বিস্তার হওয়া প্রয়োজন।

অপরাধ প্রবনতা ও অপরাধের মাত্রা কমিয়ে আনার জন্য বিশ্বজুড়ে সম্মিলিত প্রয়াস চলছে।‌এবং ক্রাইমের বিকল্প ভাবা উচিৎ। এটা কিন্তু ধনীক শ্রেনী নয়। এরা ভিন্ন জাত, অপরাধী গোষ্ঠী।

সুতরাং দেখা গিয়েছে এই যে অর্থনীতির উর্ধ্বগতির যে সূচক যা ধনীক শ্রেনীতে গিয়ে ঠেকেছে এবং অর্থের মূল্য ও গুরুত্ব তৈরি হয়েছে তার কারন হচ্ছে ধনীক শ্রেনীর ভোগ-বিলাস (luxury), প্রেম-ভালবাসা (love) ও মনুষ্যত্ব-মানবতা (humanity), যা পর্যায়ক্রমে আবার নিম্নমুখী হয়েছে। এই ভালবাসা কখনো শেষ হবার নয়।‌ প্রেম সত্য, প্রেম শ্বাশত, প্রেম চিরন্তন।‌
একদা এক ধনী ব্যক্তি যীশু খ্রিস্টের কাছে এসে জানতে চাইলেন, ঈশ্বরের স্বর্গ রাজ্যে কেমন করে যাওয়া যাবে। যীশু খ্রিস্ট তাকে কিছু আজ্ঞা পালন করতে পরামর্শ দিলেন। ধনী লোকটি জানালো সে শিশুকাল থেকেই তা শিখে এসেছে ও পালন করে আসছে। তখন যীশু বললেন, যদি খাঁটি হতে চাও তবে সকল সম্পদ বিক্রি করে ও অর্থ সম্পদ গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে এসে আমার দীক্ষা নাও আর অতঃপর ঈশ্বরের রাজ্যে ইহার চেয়েও অনেক অধিক ধন-সম্পদ ও অর্থ পাবে।

ভবিষ্যতে আরো ধনী হবে এমন আশা কিংবা স্বপ্ন-বিভোরে বর্তমানের একজন ধনী ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সব অর্থ সম্পদ বিলিয়ে দিয়ে ও বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে যাবে, এমনটা মোটেও সহজ কথা নয়! এমনটা ভাবাও অনেক দুঃসাহস ও মানসিক শক্তি প্রয়োজন বটে! যীশুর দীক্ষা নেওয়ার কি হবে তা তিনি বলেছেন, সে কষ্ট ভোগ করবে, যীশুর ক্রুশ (রুপক ও বাস্তব উভয় অর্থ) তাকে নিজ কাঁধে বহন করতে হবে, ইত্যাদি।‌

যাইহোক, ধনী ব্যাক্তিটি নিশ্চয়ই অনেক পরিশ্রম, বিনিয়োগ ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে ব্যবসা বানিজ্য করে সেরা একজন ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন, যার সাথে তার পরিবার পরিজন এবং আরো অনেক মানুষের যোগাযোগ, সম্পর্ক, জীবন, জীবিকা, কর্ম ও সমাজ ইত্যাদি জড়িত যা তার কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? প্রভু যীশু খ্রিস্টের চেয়ে জগতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান কি রয়েছে? এই সৃষ্টি জগৎ, প্রকৃতি, প্রান কিংবা জগতের জ্ঞান? যীশু খ্রিস্ট বলেছেন, আমিই পথ, শ্বাশত সত্য পথ – আমার মধ্য দিয়ে না আসলে কেউ ঈশ্বরের নিকট পৌঁছাতে পারে না। আমিই জীবন। আমিই প্রথম, আমিই শেষ। আমিই সত্য ও চিরন্তন।

যীশু খ্রিস্ট হচ্ছেন ঈশ্বরের জীবন্ত বাক্য এবং তিনি নিজেই ঈশ্বর। মানব রুপে ঈশ্বরের পুত্র হয়ে পৃথিবী আগমন করেছিলেন কিন্তু এই জগৎ নিজ জ্ঞানে তাকে চিনতে পারে নি।

অর্থ সম্পদ বিক্রি করে দেয়া ও বিলিয়ে দেবার পরামর্শ শুনে ধনী লোকটি যীশু খ্রিস্টকে ছেড়ে চলে গেলেন। কিন্তু এই ধনী ব্যক্তিটি কে ছিলেন, কেউ বলতে পারবেন কি? অতঃপর যীশু খ্রিস্ট বললেন যে ঈশ্বরের রাজ্যের উপযুক্ত অথচ তেমন কারো কারো প্রবেশ করা অনেক কঠিন, যেমন একটি সূচের ফুটো দিয়ে উটের বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হলেও তার চেয়েও কঠিন।
তখন‌ ভক্তগন বললেন তাহলে কে নাজাত পাবে আর ঈশ্বরের স্বর্গ রাজ্যে যাবে? যীশু বললেন, মানুষের দ্বারা যা অসম্ভব কিন্তু ঈশ্বরের কাছে সব কিছুই সম্ভব।

এটা বলার অর্থ যে ঈশ্বরের রাজ্যের সেবা করার জন্য ধনী ও গরিব কোন ফ্যাক্টর নয়। ধনী ও গরীব নিতান্ত পার্থিব জগতের বিষয়। কিন্তু ঈশ্বরের কাছে সকল মানুষ সম মর্যাদার এবং সবাইকে স্বর্গ রাজ্যের উপযুক্ত করেই সৃষ্টি করা হয়েছে আর তাতে অর্থ সম্পদের বিষয় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না কখনোই। কিন্তু জগতে অর্থ বৈভব ধন সম্পদের প্রয়োজন রয়েছে। আর আপনি যখন এই মর্ত্য দেহ ত্যাগ করবেন তখন নিশ্চয়ই ঈশ্বরকে জানবার আরো সুযোগ পাবেন।

অন্য একটি প্রসংগে একটু না বললেই নয় যে বাংলাদেশে বেশ বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠী রয়েছে কওমী সম্প্রদায় যারা ইসলাম ধর্মের জীবন দর্শন কিংবা পবিত্র গ্রন্থের বিশুদ্ধ চর্চা করে থাকেন দাবি করে থাকেন বা একে একটি মূল বৈশিষ্ট্যে যুগযুগ ধরে সংরক্ষণ করে সঠিক না জানা এক প্রকার উদ্দেশ্যহীনভাবেই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে অধিকাংশ জনগোষ্ঠী মুসলিম হওয়ায় এমন ইসলাম পন্থীদের উপস্থিতির প্রয়োজন রয়েছে যা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘন বা রাষ্ট্রের শৃঙ্খল ভঙ্গ, সমাজের শান্তি বিঘ্নিত হওয়া নয়।‌ কিন্তু পরিকল্পনাহীন, অনিয়ন্ত্রিত ও ইসলাম ফোবিয়ার কারনে এই কওমী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এতো বেশি সংখ্যক হয়ে গিয়েছে যে রাষ্ট্র ও সমাজ তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে অক্ষম হয়ে পড়েছে এবং তাদের শিক্ষানুযায়ী পেশাগত কর্মসংস্থানের সংকুলান হচ্ছে না এবং তা সৃষ্টি করবার সুযোগও অনেক নয়। অন্যদিকে তাদের সাথে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ও সম্পদের স্বাভাবিক বন্টনটুকুও হচ্ছে না। এবং বর্তমান বিজ্ঞান নির্ভর অধিক জনসংখ্যার সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও জ্ঞান অনুযায়ী নিজস্ব পেশার কর্মসংস্থান ছাড়া অন্যত্র কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে নেই বললেই চলে।‌ কিন্তু তবুও তারাতো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও সম মানের শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সেই মর্যাদা ধারন করবার মুল্যবোধ তাদের রয়েছে। তাই তাদের উপযুক্ত করে গড়ানো ও সেই সুযোগ সৃষ্টি করে রাষ্ট্রের অর্থ সম্পদ ও ক্ষমতার বন্টন নিশ্চিত করলেই ভালো। সরকার তাদেরকে তো আর নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায় না জামায়াত ইসলামের মতো। তবে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে প্রতি গ্রামে বা ইউনিয়নের সরকারী/রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে প্রতিযোগিতা করে যেভাবে কওমী মাদ্রাসা গড়ে উঠছে তা ঠিক হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। কারন তারা যে শিক্ষা ও দক্ষতায় পড়াশোনা শেষ করে বের হচ্ছে তাদের প্লেস করার কোন ক্ষেত্রই নেই রাষ্ট্রে। তাহলে তাদের সাথে অর্থ সম্পদ, সম্মান/মর্যাদা ও ক্ষমতার বন্টনের সুযোগ কোথায়? কিন্তু সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ/পরিকল্পিত হয়ে থাকলে পরে নিজস্ব হেক্টরের যেসব কর্মসংস্থান রয়েছে তা যথেষ্ট আর কোথায় ঘাটতি হলে সরকার মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে এডজাস্ট করার সুযোগ রয়েছে। এবং কওমীদেরও নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, মর্যাদা, অর্থ সম্পদ ও ক্ষমতারও অংশীদারিত্বের সুযোগ থাকছে। তাছাড়া বাংলাদেশ এমন ধনী বা সম্পদশালী দেশ নয় যে সকলেই ধনী ও বিপুল পরিমাণ সম্পদশীল হবে বিশ্বজুড়ে যার আর্থিক ও মানবিক মূল্যবোধ রয়েছে।‌ ঘরে বসে টিভি সংবাদ আর আলোচনা দেখে আমার এই পর্যবেক্ষণ কতটা সঠিক হলো? কেউ নিশ্চয়ই জানাবেন/বলবেন।

তবে খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও অন্য সকলের জন্যও একই প্রভিশন প্রযোজ্য।

অর্থ, ধন, সম্পদ ও ধনীক শ্রেনীর বিষয়ে লিখেছিলাম। মহান ঈশ্বর তিনি আমাদের স্বর্গীয় পিতা।‌ ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রিস্টে বিশ্বাসী হয়ে আমরাও ঈশ্বরের সন্তান‌ হবার অধিকার লাভ করেছি। তাই ঈশ্বরকে আমরা পিতা সম্বোধন করে থাকি, স্বর্গীয় পরম পিতা।‌ অন্যদিকে অর্থকে বলা হয় দ্বিতীয় ঈশ্বর (money is the second God) এবং এটি প্রসিদ্ধ অর্থ্যাৎ ঈশ্বরের সহায়ক বা পরিপুরক ধর্মী কিন্তু এবং তবে দুটো ঈশ্বর রয়েছেন এমনটা নয়। সুতরাং অর্থ 💰 হচ্ছে নারী সুলভ প্রতিকী ঈশ্বরের আরেক অস্তিত্ব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *