বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
শেরপুর,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,শুক্রবার,১৯ জানুয়ারী ২০১৮: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গণহত্যায় ৩০ শহীদ পরিবারের বিধবারা পাচ্ছেন বসতঘর। তাদের জন্য সরকারি বরাদ্দে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানকার বেঁচে থাকা বিধবা নারীরা থাকার ঘর পেয়ে সরকারের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী কার্যালয় ও সোহাগপুর শহীদ পরিবার কল্যান সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এসময় ৬২ জন নারী বিধবা হন। এদের মধ্যে নির্যাতনের শিকার ছয় নারীকে গত বছর সরকার নারী মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিয়েছেন। আরও ১২ নারীকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিতে যাচাই-বাছাই চলছে।
সম্প্রতি একজন মারা যাওয়ায় বর্তমানে বেঁচে আছেন ২৯ বিধবা নারী। এলাকার সাংসদ কৃষিমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় প্রত্যেক নারীকে প্রতিমাসে ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে দুই হাজার, বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাক থেকে ৪০০ ও সরকারি বিধবা ভাতা হিসেবে ৫০০ টাকায় পেয়ে থাকেন। এদের মধ্যে সাতজন নারীর নিজস্ব জমি ও বাড়ি ঘর না থাকায় আত্মীয়-স্বজন ও অন্যের বাড়িতে বসবাস করেন।
উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন প্রকল্প’ মাধ্যমে সোহাগপুর গণহত্যায় স্বামী-স্বজন হারা, নির্যাতিত ও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া ৩০ বিধবার জন্য এলজিইডির তত্বাবধানে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই কাজের বাস্তবায়ন চলছে।
আবাসন প্রকল্পে প্রতিটি বাড়ির জন্য দুইটি থাকার ঘর, একটি রান্নাঘর, একটি পশুপাখি রাখার ঘর ও পাশে নলকূপ ও শৌচাগার নির্মাণের জন্য ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতি ঘর লাল ও সবুজ রঙে তৈরি করা হবে। ঘর দেখলেই বুঝা যাবে এটা সরকারি অনুদানে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি।
জবেদা বেওয়া বলেন, ‘গণহত্যায় স্বামীসহ চারজনকে হারাইছি। রোজগারের কেও না থাহুনে মানুষের বাড়িতে কাম কইরা দিন চালাইতাছি। বাড়িঘর না থাহুনে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছি। গনহত্যায় বিচার পাইছি। নারী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইছি। অহন আমগোর থাহুনের লাইগা সরকার ঘরের ব্যবস্থা করছে। এতে আমগর কত খুশি ও আনন্দ বইলা বুঝাবার পাইতাম না।’
কাকরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদউল্লাহ তালুকদার বলেন, স্থানীয় সাংসদ কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর প্রচেষ্ঠায় বাসস্থানের ব্যবস্থা হওয়ায় ৩০ নারীর পরিবারসহ এলাকাবাসী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।