বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩ অপরাহ্ন

সরকারি কর্মকর্তাদের জাতির পিতার আদর্শ ধারণের আহ্বান

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৪৮ পাঠক
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩ অপরাহ্ন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আধুনিক, উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের ভিত তৈরি করে দিয়ে গেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাষ্ট্রের সব খাতে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে দেশের জনকল্যাণে কাজ করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।

সোমবার বিসিএস কর্মকর্তাদের ৭৩তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সাভারে বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন। স্বাধীনতা পাওয়ার পর সে লক্ষ্যে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় কাঠামো গঠনের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি, কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। ঘাতকের দল তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

‘বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুকরণ করে একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে। এর ধারাবাহিকতায় দক্ষ, পেশাদার মনোভাবাপন্ন জনপ্রশাসন গড়ে তোলাই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।’

প্রজাতন্ত্রের নবীন কর্মকর্তাদের দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘জনগণের সেবা দেয়া, এটা তো সাংবিধানিক কর্তব্য।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা আসছে। তখন সম্পূর্ণভাবে আইসিটি ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাবে। তার জন্য আমাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকবল সৃষ্টি করতে হবে।’

প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কথাটা জাতির পিতা বলে গেছেন, আজকে যতটুকুই অর্জন এ দেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ; তারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ঘাম ঝরিয়েই তো অর্জন করে। সেখান থেকেই তো বেতন-ভাতা আমাদের সবকিছুর সহযোগিতা হয়। কাজেই তাদের ভাগ্য আমরা কেন পরিবর্তন করব না? আর তৃণমূলের মানুষ যদি ভালো থাকে, দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি অপরিহার্য, এটা কেউ থামাতে পারবে না।’

বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণার্থীদের নিজের গ্রামে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসলে নিজের গ্রামকেই যদি আমরা না চিনি বা নিজের দেশকেই না নিজের মাটি-মানুষকে না চিনি বা তাদের সুখ-দুঃখের সাথী হতে না পারি, তাহলে তাদের সেবাটা দেব কীভাবে?’

২০৪১ সালের বাংলাদেশে নবীন কর্মকর্তারা কারিগর হিসেবে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্ল্যান দিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমার তো অনেক বয়স হয়ে গেছে। এতদিন তো আর বেঁচে থাকব না। কিন্তু যারা থাকবে, আমি মনে করি যদি এই জিনিসটা অন্তরের সঙ্গে ধারণ করতে পারে এবং আপনারা যদি এই চিন্তাচেতনাটা নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে পারেন, এই দেশটা আমাদের, এই দেশের মাটি-মানুষ আমাদের, তাদের কল্যাণেই আমাকে কাজ করতে হবে।

‘আর তারা ভালো থাকলে সবাই ভালো থাকবে। তাদের জীবনমান উন্নত হলে বাংলাদেশের উন্নতি হবে এবং বাংলাদেশ তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। লাখো শহীদের রক্তের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা দেখাতে পারব। তাদের মহান আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে পারব। তাহলেই এই দেশ এগিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আজকের যে নবীন কর্মকর্তা, তারাই তো আমাদের ২০৪১ সালের মূল কারিগর হবে। আপনারাই হবেন কারিগর, যারা এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। ২০৪১-এ থামলেই চলবে না। আমাদের অনেক কাজ।

‘জাতিসংঘ ঘোষিত সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি), সেটাও যেমন আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই দেশের মানুষ উন্নত জীবন পাক, সুন্দর জীবন পাক। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।

‘দারিদ্র্যের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি, এটা সত্য, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দরিদ্র থাকুক, সেটা আমি চাই না। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন, ভূমিহীন ঘরবাড়ি করে দেয়ার সুফল এখন দেশের মানুষ পাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজমসহ অনেকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *