সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : করোনার প্রকোপের মধ্যে অন্যান্য খাতের মতো কৃষিখাতেও পর্যাপ্ত প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ও পাটকল শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের দাবি জানিয়েছে জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন।
সোমবার (৬ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরত এক বিবৃতিতে সংগঠনটির আহ্বায়ক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও সমন্বয়ক মো. মহসিন ভুইয়া এ দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কৃষিকে নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আবহাওয়ার প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হয়। জাতিকে ক্ষুধামুক্ত রাখতে এবং অপুষ্টি থেকে বাঁচাতে কৃষক ও কৃষির অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু বর্তমানে কৃষক তার পণ্য বিপণন করতে পারছে না। যার ছাপ পড়েছে কৃষক ও কৃষির ওপর। ফলে কৃষি উৎপাদিত ফসল পানির দামে বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষিভিত্তিক ফার্ম, শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্য। সামনে বোরো মৌসুমে ধানসহ অন্য কৃষি পণ্যের দাম প্রাপ্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিকল্প নাই। এমতাবস্থায় সরকার প্রণোদনা প্যাকেজে কৃষকের বিষয়টি একেবারে অবহেলিত রয়ে গেছে, যা কৃষক সমাজকে হতাশ করেছে।
তারা বলেন, কৃষক খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছে ফসল কেটে ঘরে উঠানো নিয়ে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যারা গ্রামে বসবাস করে তাদের প্রণোদনার আওতায় এনে ফসল ঘরে উঠানোর নিশ্চয়তা বিধান করা প্রয়োজন। পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠির জন্য করোনা ভাইরাস জনিত রোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরি প্রয়োজন। ধান কাটার মৌসুমের শুরু থেকে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে দেশের পাট শ্রমিকেরর পাওনা মজুরি দ্রুত পরিশোধের দাবি জানিয়ে বলেন, করোনা কারণে সমগ্র শ্রমজীবী মানুষের সাথে সাথে পাটকল শ্রমিকরাও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। তীব্র আন্দোলনের পর জাতীয় মজুরি কমিশন অনুযায়ী খুলনাসহ সারা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা পে-স্লিপ বুঝে পেলেও সে অনুযায়ী নতুন কাঠামোতে মজুরির অর্থ এখনও বুঝে পাননি। কবে নাগাদ মজুরি পাবেন সে বিষয়েও কোনো সুনিশ্চিত তথ্য নেই শ্রমিকদের কাছে। ফলে শ্রমিকদের মধ্যে নানা অসন্তোষ ও উদ্বিগ্নতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়া শ্রমিকরা বলছেন, নতুন পে-স্লিপ দিয়ে তো আর পেট চলবে না। হাতে টাকা পেতে হবে।
তারা বলেন, এই করোনা ঝুকিতেও ৫ এপ্রিল চান্দিনায় উষা ও আশা জুট মিলের শ্রমিকরা তাদের বকেয়া মজুরির জন্য রাজপথ অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছে। এসকল বিষয়ে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে নজর দিতে হবে। শ্রমিকের পেটের ক্ষিধা না মিটিয়ে কোন প্রণোদনাই কাজে আসবে না। এই করোনা মহামারিতে মারা যাবার পূর্বে ক্ষুদায় যেন তাদের মরতে না হয় তার ব্যাবস্থা করতে সরকারকে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
এমতাবস্থায় জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন কৃষকদের সরাসরি প্রণোদনা প্রদান, গ্রামাঞ্চলে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধার ব্যবস্থা গ্রহণ, ভূমিহীন-দরিদ্র কৃষকদের পর্যাপ্ত খাদ্য প্রদান, ইরি-বোরো ফসল কাটার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেয়া, পাটকল শ্রমিদের বকেয়া মজুরি প্রদান ও খাদ্য নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহনের আহ্বান জানান।