ডেস্ক রিপোর্ট,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭: বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ‘সীমাহীন’ লাভটাকেই তাদের মন্ত্র বানিয়ে নিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে সক্রিয় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও ব্যতিক্রম নয়। তারা এদেশের রাজস্ব আইনে বিদ্যমান দুর্বলতার কারণে বিশাল পরিমাণ কর ফাঁকি দিচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ‘গেটিং টু গুড: টুওয়ার্ডস রেসপন্সিবল কর্পোরেট ট্যাক্স বিহেভিয়র’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর এ কর ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি কমিয়ে আনতে এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের জন্য করের উৎস আরো বাড়াতে পরামর্শ দেয়া হয়।
বিশ্লেষকরা বাংলাদেশ সরকারকে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্বৈতকর পরিহারের জন্যও পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, ‘কর পরিশোধ করছে এমন দাবি করে উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিশাল পরিমাণ মুনাফা তুলে নিচ্ছে। এতে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে বিশাল পরিমাণ কর্পোরেট কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব সমস্যা দূর করতে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’
অ্যাকশন এইড, ক্রিশ্চিয়ান এইড ও অক্সফামের সহায়তায় এ প্রতিবেদনটি তৈরি হয়। এতে বলা হয়, পুরনো কর রাজস্ব আইনে দুর্বলতা, বিভিন্ন সময়ে করা চুক্তির ফাঁকফোকর এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে এখনো বহুজাতিক কোম্পনিগুলোর মধ্যে কর পরিশোধের অভ্যাস গড়ে ওঠেনি।
ফলে মোট দেশজ পণ্যগুলোতে করের পরিমাণ মাত্র ১১ শতাংশেই আটকে আছে। যদিও এটা অনেক আগেই ১৬ শতাংশে উন্নীত হওয়া উচিত ছিল। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর হার ৩৩ শতাংশ এবং মাধ্যমিক শিক্ষার হার মাত্র ৩৭.৮ শতাংশ। এসব ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার জন্য অর্থায়নের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কর্পোরেট কর ফাঁকি কমিয়ে আনা খুবই প্রয়োজন। আয়ের উৎস কম হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কর্পোরেট করের উপর বেশি নির্ভর করতে হয়। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, উন্নত দেশগুলোতে মোট কর রাজস্বের আট শতাংশ আসে কর্পোরেট আয় কর থেকে। উন্নয়নশীল দেশুগুলোতে এর হার ১৬ শতাংশ।
অ্যাকশন এইডের ব্রিটেন শাখার সিনিয়র অ্যাডভোকেসি উপদেষ্টা ইভান লিভিংস্টোন বলেন, ‘কর্পোরেট কর বাড়ানোর পাশাপাশি দেশীয় কর রাজস্বের নতুন নতুন উৎস খোঁজাও জরুরি। ইভান লিভিংস্টোন আরো বলেন, ‘বৃহৎ পরিসরের উন্নয়নের সঙ্গে কর্পোরেট কর ফাঁকির বিষয়টি দূর করার বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।’