যৌন হয়রানির অভিযোগে সিটি ব্যাংকের এমডিসহ ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ব্যাংকটির সাবেক এক নারী কর্মকর্তা। এমনকি তাদের কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তাকে চাকরিচ্যুতও করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
গত রবিবার (১৮ আগস্ট) গুলশান থানায় যৌন হয়রানির অভিযোগে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন, হেড অব সিএসআরএম আবদুল ওয়াদুদ ও বোর্ড সেক্রেটারি কাফি খানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন ব্যাংকের চাকরিচ্যুত সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরা সুলতানা পপি।
বুধবার (২১ আগস্ট) মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, ‘ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করে ইতোমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’
তিনি জানান, ‘মামলার আসামিরা হলেন- সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন, হেড অব সিএসআরএম আবদুল ওয়াদুদ ও বোর্ড সেক্রেটারি কাফি খান।’
মামলাটি করা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৪০৬/৫০৬ ধারায়। ধারাগুলোতে শ্লীলতাহানি, শ্লীলতাহানিতে সহায়তা প্রদান করা এবং অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও হুমকি প্রদর্শনের অপরাধের কথা বলা আছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকে যোগদান করার পরপরই মাসরুর আরেফিন নিয়মিতভাবে বাদীকে ইভটিজিং করেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় এমডির এসব আচরণ সহ্য করেই তাকে কাজ করতে হয়। ২০১১ সালে অপর আসামি হেড অব সিএসআরএম আবদুল ওয়াদুদ গাড়িতে লিফট দেয়ার নাম করে তার ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে বসেন। লিফটের ভেতরে, অফিস চলাকালীন সিঁড়িতে তার হয়রানির শিকার হতে হয় ওই নারী সহকর্মীকে।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে লাকি শিপ বিল্ডার্সকে বিপুল অঙ্কের লোন দেয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় আমি যুক্ত হতে রাজি হইনি। এ কারণেও আমাকে রোষানলে পড়তে হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মামলার বাদী বলছেন, ‘তাদের কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় আমাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।’
জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালত থেকে ইতোমধ্যে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মনিরা সুলতানার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, চাকরিবিধি লঙ্ঘন ও ব্যাংকের গাড়ি অপব্যবহারের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। যুক্তিসঙ্গত কারণেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু এখন তিনি মামলার মাধ্যমে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ব্ল্যাকমেইল করতে চাইছেন।’