নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,শুক্রবার,১৯ জানুয়ারী ২০১৮: প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত দুই মাসে ঢাবিতে ১০ সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও ঘটনার সুষ্ঠু বিচার মিলেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আসিফ ত্বাসিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন এক বিবৃতিতে বলেন, অভিযুক্ত ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও সংগঠন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমানে একটি প্রতিকূল পরিবেশে সাংবাদিকদের কাজ করতে হচ্ছে। এসব ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত।
সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর বকশীবাজার এলাকায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন রেডিও টুডের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক নাজমুল হুদা ও দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আবদুল্লাহ আল জুবায়ের। এ সময় বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন আবদুল লতিফকে বেধড়ক মারধর করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
গত ১৫ জানুয়ারি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ডেইলি স্টারের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আশিক আবদুল্লাহ অপু ও আলোকিত বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মামুন তুষারের ওপর হামলা করা হয়। তাদের ধাক্কা দিয়ে মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। অকথ্য ভাষায় সাংবাদিকদের গালিগালাজ করা হয় এবং মুঠোফোন ভেঙে ফেলা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত দেরি করে অফিসে আসার অভিযোগের তথ্য অনুসন্ধানে গিয়ে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক কবিরুল ইসলাম কাননের ওপর হামলা করেন সেকশন অফিসার মো. নিজাম উদ্দিন, মো. আহসানুল কবির ও ছাত্রলীগ পরিচয়ে রেজিস্টারের ব্যক্তিগত পিএস শেখ মো. গিয়াস উদ্দিন।
এছাড়া গত ২৮ নভেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিডিনিউজটুয়েন্টিফোর ডটকমের স্টাফ রিপোর্টার মাসুম বিল্লাহ ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের একজন নারী সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন ছাত্রলীগের বিজয় একাত্তর হলের কিছু নেতা-কর্মী। গত ১২ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার স্টাফ রিপোর্টার সাইফ সুজন ও বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোরডটকমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক কবির আবরারের ওপর চড়াও হন দর্শন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপরোক্ত কোনো একটি ঘটনারও বিচার করেনি। কোনো কোনো ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটি গঠনের নামে বিচার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করার কৌশল নেওয়া হয়। ছাত্রলীগও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। বরং এর আগে একাধিক সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বহিষ্কৃতদের নতুন করে পদায়ন করা হয়েছে।