নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: পরিচয়ের শুরুটা ১৬ বছর আগে। একই কোচিং সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন দুজন। সেখানেই পরিচয়, বন্ধুত্ব। অতঃপর মন দেয়া-নেয়া। এই প্রেমিক যুগলের একজন আশরাফুল ইসলাম কচি, অপরজন কাজী লিমা। বর্তমানে দুজন বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন।
দুজনই এখন চ্যালেঞ্জিং পেশার সঙ্গে যুক্ত। প্রেমিক কবি একজন সাংবাদিক, প্রেমিকা লিমা পেশায় পুলিশ। পেশাগত দিক থেকে কাজের মিল থাকায় তারা পরস্পর পরিপূরক হয়ে উঠছেন।
পেশাগত কারণে দু’জনকে থাকতে হচ্ছে দু’জায়গায়। তারপরও যখনই সেময় পান চেষ্টা করেন একে অন্যকে সময় দিতে। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই নবদম্পতি জানিয়েছেন নিজেদের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা, শুনিয়েছেন তাদের সফলতার গল্প।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে জয়েন্ট নিউজ এডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন আশরাফ কচি। আজকের এই জায়গার পৌঁছুতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি তাকে। তবুও পিছু হটেনি। একচিত্তে এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন কচি। বিভাগের বড় ভাই মোশতাক, কবির ও ইশতিয়াক ভাইয়ের পরামর্শে আসেন সাংবাদিকতায়। শুরুটা দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকা দিয়ে। সেখানে ১০০০ টাকা বেতনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। তখন থেকেই নিজের পায়ে দাঁড়ানো শুরু তার।
একজন পুলিশ স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবন কতটা উপভোগ্য? মুচকি হাসি দিয়ে কচি বলেন- আগে শুনতাম সাংবাদিক-পুলিশ ঠিক বনেনা। তাদের মধ্যে সম্পর্কটা বৈরী। কিন্তু সংসার জীবনে এসে দেখলাম ঠিক তার উল্টো, বরং পেশাগত বিভিন্ন বিষয়ে মিল থাকায় একে অন্যের সাথে আলাপ-অলোচনার মাধ্যমে সহজ হয়ে যায় অনেক কিছু।
এবার আসা যাক এই দম্পতির আরেকজন কাজী মাকসুদা লিমার কথায়। ৩০তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। বর্তমানে কর্মরত আছেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে। এ নারী পুলিশ কর্মকর্তা সাহসিকতার নিদর্শনস্বরূপ পেয়েছেন ‘বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড -২০১৬’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লিমা। চ্যালেঞ্জিং জব পছন্দ হওয়ায় বেছে নেন পুলিশের চাকরি। বিসিএসে সফল হয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ পুলিশে। ট্রেনিং পিরিয়ডের দিনগুলোতে শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক বেশি কষ্ট হলেও দিনগুলো লিমার অনেক বেশি প্রিয়।
দাম্পত্য জীবন নিয়ে লিমার ভাষ্য- আমরা স্বামী-স্ত্রীর চেয়ে বন্ধু বেশি। তবে বন্ধু হওয়াতে প্রায়ই বিড়াম্বনার শিকার হতে হয়। আর তাই মা-বাবা বা শ্বশুরবাড়ি গিয়ে যখন স্বামীর নাম ধরে ডেকে ফেলেন বা তুই বলে ফেলেন পরক্ষণেই আবার তা সংশোধন করে নিতে হয়।
তবে দুজনই দায়িত্বশীল ও সেবামূলক পেশায় নিয়োজিত থাকায় দুজন দুজনকে আগের মতো সময় দিতে পারেন না। এ নিয়ে অবশ্য তাদের কারও দিক থেকেই কোনও আপত্তি কিংবা অভিযোগ নেই। বরং তারা কাজের মধ্য দিয়েই সুখের খোঁজ করে নেন। সময় পেলেই মেতে উঠেছে দাম্পত্য রোমান্সে।