শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন

প্রতিবেশীদের নির্বাচন: ভারত নির্ঘুম

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ০ Views পাঠক
মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৮

নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,মঙ্গলবার,০২ জানুয়ারী, ২০১৮ : সুব্রামানিয়াম জয়শংকরের জায়গায় ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব হয়েছেন বিজয় গোখলে। এমন এক সময়ে তিনি দায়িত্ব নিলেন, যখন প্রতিবেশী দেশগুলোর নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জে আছে ভারত। আগামী ১৬ মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে এসব নির্বাচন। এরইমধ্যে ভারতের প্রতিবেশী অনেক দেশের সরকারের অবস্থা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না।

২০১৭ সালের শেষ দিকে নির্বাচন হয়েছে নেপালে। সেখানে কেপি অলির জায়গায় ভারত ক্ষমতায় এনেছিল শের বাহাদুর দেউবাকে। কিন্তু সেই সফলতা শেষ পর্যন্ত টিকেনি। আবারো ক্ষমতায় এসেছেন কেপি অলি।

এদিকে চলতি বছরের জুনে সাধারণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে পাকিস্তানে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগই আবার ক্ষমতায় আসবে। সেপ্টেম্বরে নির্বাচন হবে মালদ্বীপে। সেখানকার আবদুল্লাহ ইয়ামিন সরকারেও আস্থা নেই ভারতের। ওই নির্বাচন নিয়েও শঙ্কায় আছে দেশটি। ভুটানে নির্বাচন হবে ২০১৮ সালের গ্রীষ্মে। নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসে- তার ওপর নির্ভর করবে ভারত দেশটির সঙ্গে কী আচরণ করবে।

বিশেষ করে চলতি বছর ডোকালাম নিয়ে চীনের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থার পর ওই অঞ্চলে চ্যালেঞ্জ বেড়েছে ভারতের। দেশটির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে চলতি বছরের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বাংলাদেশের নির্বাচন।

ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে দৃঢ় সমর্থন দিয়ে আসছে ভারত। তবে পরপর দুই দফা ক্ষমতায় থাকার বর্তমানে বাংলাদেশে তীব্র ‘ক্ষমতাসীনবিরোধী’ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে। দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সম্পর্কের ব্যাপারে এসব বিষয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে দিল্লির বিশ্লেষকরা।

২০১৮ সালের জুলাইতে সংসদ নির্বাচন হবে ভারতের আরেক প্রতিবেশী আফগানিস্তানেও। দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০১৯ সালের এপ্রিলে। শ্রীলংকা ছাড়া এই অঞ্চলের সব দেশের নির্বাচনই এই সময়ের মধ্যে হয়ে যাবে। ভারতের নিজের সাধারণ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে ২০১৯ সালে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুটি কারণে এসব নির্বাচন সামাল দেয়া কঠিন হবে ভারতের জন্য। প্রথমত, দেশটির আজকের সফলতা ভবিষ্যতে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এজন্য বারবার কূটনীতিতে পরিবর্তন আনতে হয় দেশটিকে। দ্বিতীয়ত, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চীনের উপস্থিতি আগের চেয়ে বহুগুণে শক্তিশালী। প্রতিবেশীরাও মেনে নিচ্ছে চীনকে, যার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ নেপাল।

এ বিষয়ে নেপাল বিষয়ক এক ভারতীয় বিশ্লেষক বলেন, ‘অবরোধ দিয়ে আমরা পাহাড়ি অঞ্চলের নেপালিদের সমর্থন হারিয়েছি। আর দ্রুত সেই অবরোধ তুলে সমর্থন হারিয়েছি মাধেসিদের।’ কেপি অলি ঝুঁকছেন চীনের দিকে। বিমসটেক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাঠমুণ্ডু যাবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তে তা অলি আটকে দেন কি না- এ নিয়ে রয়েছে সংশয়।

এদিকে পাকিস্তানে মুসলিম লীগ ক্ষমতায় এলে চীনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে দেশটির প্রতি। বিশেষ করে খুব দ্রুতই এগিয়ে যাবে তাদের অর্থনৈতিক করিডোর সিপিইসি। এক্ষেত্রে ভারতের বিরোধিতা কাজে আসবে না বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

মালদ্বীপের সঙ্গে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ সম্পর্ক যাচ্ছে ভারতের। বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে দেশটির সরকারের বাধায় পড়েন মালেতে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অখিলেস মিশ্র। মালদ্বীপে পূর্বের গাইয়ুম বা নাশিদ সরকার ক্ষমতায় এলেও যে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে- তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।

এক্ষেত্রে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সবচেয়ে উষ্ণতা বিরাজ করছে বাংলাদেশের সঙ্গে। ইতিমধ্যে দুই দেশের মধ্যে হয়েছে বেশ কয়েকটি চুক্তি। শুধু ২০১৭ সালেই প্রতিরক্ষাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ৫০০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে ভারত সরকার। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিলেও রাখাইনে তাদের বাড়িঘর নির্মাণ করতে ২৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে তারা। যদিও অনেকের ধারণা, হিন্দু রোহিঙ্গাদের জন্যই ভারতের ওই অর্থ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই পাতার আওর সংবাদ