নিজস্ব প্রতিবেদক । বর্তমানকণ্ঠ ডটকম:
কনকন শীতে পল্লী গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে পিঠা উৎসব। আর গ্রামের মানুষ মাঠে মেতেছে গ্রাম-বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলা নিয়ে। তেমনি নরসিংদীর মাধবদীতে কাঠালিয়া ইউনিয়নের দস্তরদী গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী রশিটান (কাছিটান) খেলা। এ খেলা দেখার জন্য অনেক দূর থেকে হাজারো মানুষ পাড়ি জমিয়েছেন এ গ্রামে। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখেতে প্রতিবছরই সাংকৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পাশাপাশি কাছিটান খেলার আয়োজন করেন দস্তরদী পল্লী উন্নয়ন যুব সংঘ।
দু’দিন ব্যাপি এ আয়োজনের প্রধান অতিথি ছিলেন জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর দিলকুশা শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবুল কালাম আজাদ (জাকির)। উদ্বোধক ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম মিন্টু। তিনি খেলার শুরুতেই মশাল জ্বালিয়ে, পায়রা ও জাতীয় পতাকা উড়িয়ে এ খেলার শুভ উদ্বোধন করেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন নরসিংদী সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সেলিম সিকু, মাধবদী থানা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও যমুনা টেলিভিশনের রিপোর্টার তৌহিদুর রহমান, কাঠালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এমরান হোসেন মিয়া।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের ইউপি সদস্য নাছির মিয়া ও সদর উপজেলা যুবলীগ কর্মী আমনিুল ইসলাম নবীর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ নেতা দ্বীন মোহাম্মদ দিলু, কাঠালিয়া ইউনিয় আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক হারুন অর রশীদ মুন্সি, মাধবদী থানা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও পল্লী টিভি নরসিংদী প্রতিনিধি খন্দকার শাহিন, সদর উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম মঈন। এ খেলায় সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, মোমেন মিয়া, যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, আমজাদ, ফারুক, লিটন, আলমগীর প্রমুখ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাছিটান খেলাটি সন্ধ্যায় শুরু হয়ে পরদিন সকাল পর্যন্ত দাড়িয়ে তা উপভোগ করে নানা বয়সের নারী-পুরুষ। এসময় টানটান উত্তেজনার খেলার সাবলীল আনন্দে মেতে উঠে সবাই।
কাছিটান প্রতিযোগিতায় ৮ টি দল অংশ নেয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিভিন্ন রাউন্ড শেষে রবিবার (২৭ জানুয়ারি) ভোরে দস্তরদী উত্তরপাড়া একাদশ বনাম বলভর্দী একাদশের মধ্যে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা শুরুর আগেই খেলা মাঠে বিভিন্ন বয়সের কয়েক হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমায়।
খেলায় প্রতিযোগী দল নানা স্লোগানে যখন সম্মিলিতভাবে কাছিটান দেয়, তখন এর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে তাদের সমর্থকদের মধ্যেও। দীর্ঘ দেড় ঘন্টার মত টানটান উত্তেজনায় তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী এই খেলায় দুটি রাউন্ডেই বলভর্দী একাদশ বিজয়ী হয়ে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলকে একটি ফ্রিজ ও রানারআপ দলকে একটি টিভি পুরুস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ।
ঐতিহ্যবাহী কাছিটানের প্রতিযোগিতায় ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় খুশি আয়োজকরা। ভবিষ্যতে উপজেলা পর্যায়ে আরো বড় পরিসরে এই খেলার পাশাপাশি ইসলামিক সংগিত ও ক্বেরার প্রতিযোগিতার পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক শফিকুল ইসলাম মিন্টু।
প্রধান অতিথি আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ‘নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাছিটান খেলাকে পরিচিত করতে আরো বেশি করে এই খেলার আয়োজন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে জনপ্রিয় এই খেলাটিকে ধরে রাখতে প্রতিবছরই সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।’