নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৮: ব্যক্তিগত সফরে বাংলাদেশে আসা ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আশা করছেন, এবার তার ‘রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচাও’ হবে। রোববার ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এমন মন্তব্য করেন।
প্রণব এবার বাংলাদেশে এসেছেন মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এবার পাচ্ছেন সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি, যাবেন মাস্টারদা সূর্য সেনের জন্মভূমি রাউজানেও। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সোমবার দুপুরে তাকে গণভবনে ঘরোয়া মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করেছেন শেখ হাসিনা। বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হবে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের উন্নয়নে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ভোটের বছরে তার এই সফরকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন রাজনীতির বিশ্লেষকরা।
ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাঙালি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের জুলাইয়ে। পাঁচ দিনের ব্যক্তিগত সফরে রোববার ঢাকা পৌঁছান তিনি।
সন্ধ্যায় ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনে তার জন্য যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকরাও।
অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতির বক্তব্য ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত। কিন্তু তার মধ্যেই তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেন।
প্রণব বলেন, ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম বিদেশ সফর ছিল এই বাংলাদেশে; অবশ্য যদি তার প্রয়াত স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের জন্মভূমিকে ‘বিদেশ বলতে হয়’।
রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৩ সালের মার্চে বাংলাদেশ সফরে এসে স্ত্রীকে নিয়ে নড়াইলে শ্বশুরালয়ে ঘুরে গিয়েছিলেন প্রণব। সে সময় বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানে তার হাতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ তুলে দেন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।
একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতা প্রণব ছিলেন রাজ্যসভার সদস্য। ভারতের অনেক রাজনীতিকের মত তিনিও মুক্তিকামী বাঙালির পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।
এখনও যে বাংলাদেশের সঙ্গে তার সেই সম্পর্ক অটুট, সে কথা তিনি বুঝিয়ে দেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের সবাইকেই ব্যক্তিগতভাবে ‘চেনার’ কথা জানিয়ে। বাংলাদেশ সফর নিয়ে তিনি বলেন, “এক কথায় বলা যায় রথ দেখা ও কলা বেচা দুটোই হয়ে যাবে।”
সংক্ষিপ্ত আলোচনার সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিল গানের আয়োজন। পরে উপস্থিত মন্ত্রিসভার সদস্য এবং অন্যদের সঙ্গে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতির ছবিও তোলা হয়। পাঁচ দিনের এই সফর শেষে বৃহস্পতিবার সকালে তার ভারতে ফেরার কথা রয়েছে।