ডেস্ক রিপোর্ট:
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি বান্দরবান জেলার রমায় অবস্থিত বগা লেকের পানির রঙ হঠাৎ নীল থেকে ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি পানি থেকে উৎকট গন্ধও ছড়াচ্ছে। এই নিয়ে পর্যটক ও এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বছরের এসময়ে একবার পানি সামান্য ঘোলা হযে থাকে। তবে এবার বেশি হয়েছে। জনশ্রুতি আছে, যে বছর বেশি বগা লেকের পানি ঘোলা হবে সে বছর জুমে ফসল বেশি ভাল হয়। এবার সামনে জুমে উৎপাদিত ফসলগুলো ভাল ফলন হবে বলে দাবি করেন বগা লেক মারমা পাড়া কারবারি মংথোয়াইচিং মারমা (৬৭) ও হেডম্যান বাথোয়াইঅং মারমা।
বগা লেকের বাসিন্দা সিয়াম (৪৫) ও লালকিমলিয়ান বম ( ৩৭) বলেন, জানুয়ারির শুরু দিকে হঠাৎ ঘোলা হওয়া শুরু হয়। এই কয়েকদিনে বেশি ঘোলা হওয়ায় খাবার পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। একবার ঘোলা হলে ২০-৩০ দিন স্থায়ী থাকে না। তবে এবার কতদিন চলবে তা অপেক্ষা করতে হবে বলে জানালেন তারা।
এদিকে নীলফামারী থেকে আসা পর্যটক মীর নাছির (৪৩) বলেন, প্রতি বছর বগা লেক দেখতে লোকজন সঙ্গীদের নিয়ে আসেন। তবে বগা লেকের পানি হঠাৎ ঘোলা হওয়ার কথা শুনে সঙ্গীদের নিয়ে আবারও আসছেন তারা।
জনশ্রুত অপর একটি ভাষ্যমতে, বগা লেকের তলায় থাকা ড্রাগন বছরে একবার নড়াচড়া করে। তখন পানি ঘোলাটে হয়ে থাকে। এবারো তার ব্যতিক্রম নয়। এসময়ে বগা লেক থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে বিলাইছড়ি উপজেলায় বতলি ইউনিয়নের রাইখ্য পুকুরের পানি ও ঘোলা হচ্ছে বলে জানালেন বড়থলি ইউপি চেয়ারম্যান অতোমং মারমা (৪৭)।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. অলক পাল ব্রেকিংনিউজকে বলেন, আমার জানামতে বছরে একবার লেকের পানি ঘোলাটে হয়। সেখানে লোকদের মাঝে একটা রূপকথা চালু আছে। আমরা সেটিকে সত্য বা মিথ্যা কোনটিই বলব না। এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি হতে পারে এমন যে, আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো যে শীলা দ্বারা গঠিত সেগুলো হলো পাললিক শীলা। অনেকে বলার চেষ্টা করে এখানে কিছুটা আগ্নেয়শীলা থাকতে পারে। হয়ত এখানে কোন না কোন সময় আগ্নেয় পর্বতের অবস্থান ছিল। এ কারণে এমনটা হতে পারে।
আবার কেউ বলে থাকেন পাশে কিউকারাডং পাহাড় থাকায় কোন না কোনভাবে ফাটলের মাধ্যমে গলিত পর্দার্থের বাষ্পের উদগিরন হয়।
পানি ঘোলা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভূতত্ত্ববিদদের অধিক গবেষণা করা প্রয়োজন বলেও জানান এ পরিবেশবিদ।