আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে পারলেই ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি মিলবে: মির্জা ফখরুল

উত্তরায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহিদদের স্মরণে সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা যেন আর দেশে ফিরে আসতে না পারেন সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদের হাত থেকে আপাতত মুক্তি পেয়েছি। এই মুক্তি তখনই চূড়ান্ত হবে যখন তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) আমরা রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারব।’
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকালে রাজধানী উত্তরার আজমপুরে আমির কমপ্লেক্সের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহিদদের স্মরণে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ওপর সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের সংবাদকে ‘দেশের জন্য ভালো খবর’ বলে অভিহিতি করে তিনি বলেন, ‘এজন্য আমি অন্তবর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
এক বছরে জুলাই শহিদদের তালিকা না হওয়ার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলেন যে তাদের অনেক ভুল-ত্রুটি আ্ছে, অভিজ্ঞতা নেই। আমি আশা করেছিলাম, এক বছরের মধ্যে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের প্রকৃত তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। দুর্ভাগ্য, তারা পুরোটা করতে পারেনি। কিন্তু তারা চেষ্টা করছে। আমরা আশা করছি, দুই একদিনের মধ্যেই সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসবে।’
নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। কোনো সমস্যা হলে তারা কার কাছে যাবে? কোনো এমপি নেই, তাদের সমস্যা পার্লামেন্টে কে তুলে ধরবে? এজন্যই আমাদের দ্রুত নির্বাচন দরকার, খুব দ্রুত পার্লামেন্ট দরকার, যে পার্লামেন্টে আমরা আমাদের কথাগুলো বলতে পারব।
মির্জা ফখরুল বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে যুদ্ধ ও লড়াই শুরু হয়েছে। যারা লুটপাট করে, যারা ব্যাংক লুট করে, যারা চাদাবাজি করে, যারা মানুষের সম্পত্তি দখল করে, তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো আপোষ নেই। তাদেরকে আমরা কখনোই স্বীকার করব না। তাদেরকে কোনমতেই সামনে আসতে দেব না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে দেশে আসবেন অপেক্ষা করছি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার মতোই আজকে জনগণ তারেক রহমানের ওপর আস্থা রাখছে। অপেক্ষা করছি, কবে তারেক রহমান দেশে আসবেন। কবে নেতৃত্ব দেবেন। তারেক রহমান আগামীতে নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রান্তিক মানুষের জন্য ‘ফার্মাস কার্ড’, ‘স্বাস্থ্য কার্ড’, ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নিয়েছেন, সেসব পরিকল্পনার কথাও বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এক বছর আগে এই দিনে উত্তরা উত্তাল হয়েছিল উল্লেখ করে শহিদ পরিবারের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএমএ আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নিরব, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীরসহ শহিদ পরিবারের সদস্যরা।