সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

বাংলাদেশকে নিয়ে সার্কের বিকল্প জোট গঠন করছে চীন-পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: / ২৫৯ পাঠক
প্রকাশকাল সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

পাকিস্তান এবং চীন একটি নতুন আঞ্চলিক জোট প্রতিষ্ঠা নিয়ে কাজ করছে যা বর্তমানে বিলুপ্ত দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্কের (SAARC) বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে।

এ সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এ বিষয়ে ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের মধ্যে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে। দুই পক্ষই মনে করছে, আঞ্চলিক সংহতি ও যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য এখনই একটি নতুন সংগঠন তৈরি করা জরুরি।

সোমবার (৩০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই উদ্যোগ সম্পর্কে অবগত কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটা জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ এবং বেইজিং উভয় পক্ষই নিশ্চিতভাবে মনে করছে যে, আঞ্চলিক সংহতকরণ এবং সংযোগের জন্য একটি নতুন সংগঠন এখন সময়ের প্রয়োজন। চীনের কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান, চীন এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটি ছিল সেই কূটনৈতিক কৌশলের অংশ।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, তিন দেশের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটিই প্রথমবারের মতো ভারতে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত ১৯ জুন চীনের কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল, সার্কভুক্ত অন্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে নতুন এই জোটে যোগদানের আহ্বান জানানো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র বলছে, প্রস্তাবিত এই ফোরামে ভারতকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে ভারতের স্বার্থ ভিন্ন হওয়ায় দেশটি ইতিবাচক সাড়া দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

তবে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশ নতুন এই আঞ্চলিক জোটে যোগ দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই নতুন জোটের মূল উদ্দেশ্য হলো—আঞ্চলিক যোগাযোগ ও বাণিজ্য বাড়িয়ে পারস্পরিক সম্পৃক্ততা আরও দৃঢ় করা। যদি এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়, তাহলে কোনো এক সময় দক্ষিণ এশিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) হিসেবে বিবেচিত সার্ক কার্যত মৃত সংগঠন হয়ে পড়বে।

সার্ক তার লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত পাকিস্তান ও ভারতের বৈরী সম্পর্কের কারণে এই জোট কার্যকর হতে পারেনি।

সার্কের সর্বশেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে ওই সম্মেলন আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু ভারত সেই সম্মেলনে অংশ নেয় না। বাংলাদেশও ভারতকে অনুসরণ করে সম্মেলনে যোগ দেয়নি।

এরপর থেকে সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে আর কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, যদিও পাকিস্তান ওই সম্মেলনের আয়োজন করতে আগ্রহী ছিল। সম্প্রতি সার্ক আরেকটি বড় ধাক্কা খায়, যখন ভারত পাক ব্যবসায়ীদের জন্য সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে বিশেষ ভিসা সুবিধা বন্ধ করে দেয়। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত এ সিদ্ধান্ত নেয়।

পাকিস্তান ও চীন মাসের পর মাস ধরে নতুন এই সংগঠনের বিষয়ে আলোচনা করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা মনে করছে, যারা একই রকম চিন্তা-ভাবনা পোষণ করে, তাদের এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার সময় এখন।

পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন, ভারত তার ভিন্ন স্বার্থের কারণে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) এর মতো অন্যান্য আঞ্চলিক গোষ্ঠীতে নিজেকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করছে। এর প্রমাণ, দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত দুটি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলনে অংশ নেননি। ১০ সদস্যের এই নিরাপত্তা জোটে রয়েছে চীন, রাশিয়া, ইরান, পাকিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ।

এসসিও-কে অনেক সময় পশ্চিমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে আঞ্চলিক জোট হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এতে চীন ও রাশিয়ার মতো দেশ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত এসসিও-র মূল এজেন্ডার বিরোধিতা করছে বলে মনে হচ্ছে।

সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন


এই ক্যাটাগরির আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর