মাধবদী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মীদের সাহসিক সহযোগিতা

নরসিংদীতে মাধবদী বাজারের মুড়ি পট্টিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। সোমবার (৪ জুলাই) ভোর ৫টায় ঘটে যাওয়া এই অগ্নিকাণ্ডে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে, পুরো এলাকা কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আগুন নেভানোর পাশাপাশি উদ্ধারকাজেও যুক্ত হন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। বিশেষভাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর স্থানীয় নেতাকর্মীরা মানবিক সহায়তার নজির স্থাপন করেন। আগুন নেভাতে সহায়তা, পানির পাইপ টেনে আনা, দগ্ধ ব্যক্তিদের সহায়তা এবং ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক কর্মী বলেন, “এটি আমাদের মানবিক দায়িত্ব। দুর্যোগের এই মুহূর্তে আমরা জনগণের পাশে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে অধিকাংশই ছিলো মুদি মনোহরী, ইলেক্ট্রিক ও স্বর্ণের দোকান। বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ও দোকানের মালামালের মাধ্যমে আগুন দ্রুতই চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা বলেন, আগুন এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে মুহূর্তের মধ্যেই তা বাজারের মুড়িপট্টির একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। পরে, স্থানীয় ব্যবসায়ী, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ’র স্বেচ্ছাসেবী টিম ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টায় বেলা ১০টার দিকে আগুন পুরোপুরি নির্বাপিত হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবী, এই ঘটনায় অন্তত শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে ১০টি স্বর্ণের দোকান। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বর্ণের দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে দাবী ব্যবসীয়দের। তবে কোন দোকান থেকে এবং কী কারণে আগুন লেগেছে—তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মাধবদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রায়হান আহমেদ জানিয়েছেন, ভোর ৫টার দিকে আগুনের সংবাদ পেয়ে দ্রুতই কাজ শুরু করে মাধবদী ফায়ার সার্ভিস। পরবর্তীতে নরসিংদী ও পলাশের ইউনিটসহ মোট পাঁচটি ইউনিট যুক্ত হয়ে সকাল ১০টার দিকে পুরোপুরি নির্বাপন করতে সক্ষম হয়। দুর্ঘটনায় কোন প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। অগ্নিকান্ডের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। ব্যবসীয়দের দাবী সেখানে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঘটনার পরপর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছাড়াও জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশ ও বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, জেলা প্রশাসক, নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রেসিডেন্ট, উপজেলা নির্বাহী ও পৌস প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শোক প্রকাশ ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।