শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন

ছাত্রদলের নেতৃত্বে ‘সেশনজট’, চার বছরেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি

ডেস্ক রিপোর্ট | বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: / ১৬৭ পাঠক
প্রকাশকাল শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির বয়স চার বছর পূর্ণ হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি। মাত্র তিন মাসের জন্য ঘোষিত কমিটি অছাত্র, বিবাহিত, নিষ্ক্রিয় ও চাকরিজীবী সদস্য দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বহাল থাকায় সংগঠনের ভেতরে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আরিফুল ইসলাম জনি নামে এক ছাত্রদল কর্মী বলেন, ‘৪ বছরে কেউ অনার্স শেষ করে, কেউ বিয়ে করে সংসার গুছায়। আর ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ৪ বছরেও ‘আহ্বায়ক’ তকমা আঁকড়ে আছে। কমিটি গঠন মনে হয় এখনো কল্পনার স্তরে। সভা হয়, খসড়া চলে, সিদ্ধান্ত প্যাকেটে মুড়ে রাখা হয় ভবিষ্যতের জন্য। ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি আজ সেশনজটের প্রতীক। সবেমাত্র ৪ বছর। চলছে-চলুক, আমরা আছি।’

এছাড়া শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বয়স নিয়েও চলছে নানা সমালোচনা। বিভিন্ন মহলে আদুভাই বা চাচ্চু বলে সম্বোধনও করা হচ্ছে তাদের। এ নিয়ে ছাত্রদলে পদপ্রত্যাশি ও দীর্ঘদিন ধরে পদবঞ্চিতরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

তারা জানান, অনেকদিন ধরে দলীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় শিক্ষার্থীরা পদ ধরে আছেন। অনেকে বিবাহিত ও চাকরিজীবী। এতে সংগঠনের দুর্দিনের ত্যাগী ও সক্রিয় কর্মীরা পরিচয়হীনতায় ভুগছে।

জানা যায়, ২০২১ সালের ১৬ জুন লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের সাহেদ আহম্মেদকে আহ্বায়ক ও ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মাসুদ রুমী মিথুনকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ঘোষণার সময় কমিটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন মাস।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ মেয়াদি এই আহ্বায়ক কমিটির অধিকাংশ সদস্যই দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয়। অনেকে বিবাহিত ও চাকরিজীবী। কেউ কেউ বিদেশেও অবস্থান করছেন। এতে পদবঞ্চিত এবং নতুন কর্মীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন।

শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ জানান, ‘কমিটি ঘোষণার পরদিনই আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। অধিকাংশ সদস্যই অচেনা, নিষ্ক্রিয় এবং অনেকে ছাত্র নয়। ফলে নিয়মিত নেতাকর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। সেদিন থেকেই আমি চাই যে নতুন করে কমিটি হোক। এই কমিটির সিংহভাগ নেতারা নিষ্ক্রিয় এবং ৫/৬ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিনা আমরা জানি না। এই কমিটি মেয়াদত্তীর্ণ ও অনেকেই বিবাহিত। আমাদের ত্যাগী কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই বিষয়গুলো ভালোভাবে নেয় না।’

‘এছাড়াও আমি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে নিয়মিত সাধারণ শিক্ষার্থী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের সম্মুখীন হই। আমি মনে করি এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এবং আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক জনাব তারেক রহমান অবগত আছেন। আমি বিশ্বাস করি দল খুব দ্রুত একটি সুন্দর কমিটি উপহার দেবে এবং সেখানে ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে।’

এ বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘রাজনৈতিক কিছু বিষয়ের জন্য, বিশেষ করে জামাত-শিবিরের গুপ্ত অপরাজনীতি চেপে বসার কারণে ক্যাম্পাসে অভিজ্ঞদের প্রয়োজন ছিল। তাই আমরা এতদিন আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। যারা দীর্ঘদিন ধরে ইবি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং ত্যাগী তাদেরকে আমরা কমিটির আওতায় এনে শিগগিরই কমিটি দিব।’


এই ক্যাটাগরির আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর