শেরপুর পৌরসভায় ৭৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

শেরপুর পৌরসভাকে আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও স্মার্ট পৌরসভায় রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭৩ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে পৌর প্রশাসন।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১টায় উপজেলার পরিষদ মিলনায়তনে এ বাজেট ঘোষণা করেন পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক খান।
বাজেট বক্তৃতায় প্রশাসক আশিক খান বলেন, “সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে শেরপুর পৌরসভাকে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। এডিপি’র সাধারণ ও বিশেষ বরাদ্দে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা এবং কোভিড-১৯ প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৩২ লাখ টাকায় ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। এ প্রকল্পে আরও ৩ কোটি টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, চলতি অর্থবছরে প্রায় ১৯ কোটি ৩১ লাখ টাকার একটি প্রকল্পে ২.৬ কিলোমিটার সড়ক, ১১টি ড্রেন ও ১৩টি লিংক রোড নির্মাণের দরপত্র আহ্বান চলছে।
বাজেটে রাজস্ব আয়ের উৎস হিসেবে নিজস্ব খাত, হাটবাজার ইজারা ও সরকারি অনুদান মিলিয়ে ৭ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।
উন্নয়ন সহায়তা মঞ্জুরি ২ কোটি ২০ লাখ, রেজিলিয়েন্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (আরইউটিডিপি) থেকে ৩৫ কোটি, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২ কোটি এবং কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রকল্প থেকে ৩ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে।
বাজেটে নাগরিক সেবা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিচ্ছন্নতা এবং ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
পৌর নাগরিকদের উন্নত সেবা নিশ্চিতে ৯টি ওয়ার্ডে দায়িত্ব ভাগ করে ২ জন করে সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নাগরিকত্ব, ওয়ারিশান ও চারিত্রিক সনদসহ অন্যান্য প্রত্যয়নপত্র অনলাইনে www.pratyon.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে।
এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন এবং পৌরকর আদায়ের কার্যক্রমও ধাপে ধাপে ডিজিটালাইজ করা হচ্ছে।
পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইতিমধ্যে লাইন স্থাপন, পাম্প ও জলাধার নির্মাণ শেষ পর্যায়ে।
এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় ৫ তলা আধুনিক কিচেন মার্কেট শিগগির উদ্বোধন হবে। বারদুয়ারি হাটে কাঁচা বাজার নির্মাণ ও পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীদের (হরিজন) জন্য ১০ কোটি টাকায় ৬ তলা আবাসিক ভবনের কাজও চলছে।
প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থায়ী ডাস্টবিন নির্মাণ ও নিজস্ব স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনের জন্য জমি ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলছে।
বাজেট অধিবেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী, শেরপুর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দিন, উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল মজিদ, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বাজেট বক্তৃতার শেষ অংশে প্রশাসক আশিক খান বলেন, “শেরপুর পৌরসভাকে একটি পরিচ্ছন্ন, ডিজিটাল ও বাসযোগ্য শহরে রূপ দিতে আমরা সবাইকে সঙ্গে চাই।”