সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন

ইফতারের পূর্ণতায় বাহারি কাবাব

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩১ পাঠক
বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩

কাবাব! নাম শুনলেই যেন জিভে জল এসে যায়। ছোট-বড় সবারই প্রিয় গরম গরম, ঝাল ঝাল মুখরোচক খাবার কাবাব। আর কাবাব ছাড়া ইফতার যেন অপূর্ণই রয়ে যায়। তাই হরেক রকম কাবাবে পূর্ণ থাকে অনেকের ইফতারির টেবিল।
ইফতারের পূর্ণতায় বাহারি কাবাব
বাহারি সব নাম আর স্বাদের কাবাব হয় আজকাল। পরোটা, রুটি, পোলাও, খিচুড়ি এমনকি গরম ভাতের সঙ্গেও খাওয়া যায় কাবাব। তৈরির উপকরণ থেকে পদ্ধতি সবকিছুতেই থাকে ভিন্নতা। গরু, খাসি কিংবা মুরগি যেকোনোটির মাংস দিয়েই তৈরি হয় সুস্বাদু কাবাব। তেলে ভাজা, সেঁকা, পোড়া বিভিন্ন স্টাইলে হাজির হয় এসব কাবাব।

বিভিন্ন স্বাদে আর নামে পাওয়া যায় কাবাব। এগুলোর মধ্যে চিকেন কাবাব, শামী কাবাব, কিমা কাবাব, শিক কাবাব, গরুর হাঁড়ি কাবাব উল্লেখযোগ্য। সুতি কাবাব, বিন্দি কাবাব, দম কাবাব, খিরি কাবাব, টিক্কা কাবাব, রেশমি কাবাব আর জালি কাবাবও রয়েছে।

কালের বিবর্তনে ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে কাবাব। পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের ইফতারে বিরিয়ানি হোক আর অন্য কিছু, কাবাব থাকা চাই-ই চাই।

ভারত উপমহাদেশে কাবাবের প্রচলন হয় তুর্কি ও আফগানদের হাত ধরে। মোগলরাও কাবাবের সমঝদার ছিলেন। শিকে চড়িয়ে এই কাবাব প্রস্তুত করা হয় এবং তান্দুরি কিংবা নানের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। শাম থেকে আগত বাবুর্চিরা মোগল দরবারে প্রথম এই কাবাব প্রস্তুত করে বিধায় তাদের সম্মানে এই কাবাবের নামকরণ হয় শামী কাবাব।

বর্তমান সময়ে চিকেন চাপলি কাবাব, বটি কাবাব, বিফ বারবিকিউ কাবাব সবার কাছে বেশ জনপ্রিয়। কাবাব নাম পরিবর্তন করে অনেকে এ খাবারকে শাসলিকও বলছেন। তবে পুরোনো বাবুর্চিরা বলছেন কাবাব আর শাসলিকের স্বাদ ভিন্ন। এদিকে মুরগির গ্রিল আর গরু কিংবা মুরগির চাপ সুলভ ও সহজলভ্য হওয়ায় কাবাব খাওয়া থেকে অনেকেই সরে আসছেন।

রাজধানীর পুরান ঢাকার বিখ্যাত ইফতারির বাজারগুলো মধ্যে চকবাজার, কাজী আলাউদ্দিন রোড, নাজিমুদ্দিন রোড, উর্দু রোড, বংশাল, সিদ্দিকবাজার, চকবাজার, রায়সাহেব বাজার, নবাবপুর, কোতোয়ালি, ইসলামপুরে কাবাবের বেচাকেনা বেশ জমজমাট। এসব কাবাব ৫০ টাকা থেকে শুরু করে নাম ও মাংসভেদে ৮০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

রায়সাহেব বাজারে ইফতারি কিনতে আসা আফজাল হোসেন বলেন, ‘সবই নিয়েছি, বাসার সবাই একসঙ্গে ইফতার করি। কাবাবটা সবাই পছন্দ করে। বাসায় ছোট মেয়ে আছে। তার জন্যও নিয়েছি।’

এদিকে ধূপখোলা মাঠের পাশে ইফতারি কিনে বাসায় যাচ্ছেন চাকরিজীবী রাব্বি। তিনি বলেন, ‘মেসে থাকি আমরা। সবাই বুট, মুড়ি খাই। কাবাব হলে আলাদা স্বাদ পাওয়া যায়। শিক কাবাব আর শাসলিক নিয়েছি। কাবাবের মান কমেছে বলব না, পরিমাণ কমেছে, দামটা বেশ বেড়েছে। সবকিছুর দামই তো বাড়তি।’

চকবাজারে ২৫ বছর ধরে ইফতারি বিক্রি করেছেন রাজিব হোসেন। হাস্যোজ্জ্বল চোখে তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার মানুষ ইফতারে আর কিছু না নিলেও কাবাব ঠিকই নেবে। কাবাব ছাড়া তাদের ইফতার অসম্পূর্ণই থেকে যায়।’

মোজাম্মেল নামের একজন দোকানি বলেন, ‘মামা এখানে আমগো ৩২ বছরের ইফতারি বিক্রির গল্প জানা আছে। তয় এহন জিনিসপত্রের যে দাম বাড়ছে, তাতে কইরা মানুষ খুব বেশি ইফতারি কিনতে আহে নাই। কাবাব তো কত বছর আগেওতেই চলতেছে। এটা কি বন্ধ হইব নাকি! এইডার বেচা ও অয়। ইছতারের আগই শেষ হইয়্যা যায়।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই পাতার আওর সংবাদ