স্পোর্টস ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,মঙ্গলবার,২৪ জুলাই ২০১৮: ওজিলের বর্ণবাদের অভিযোগকে পুরোপুরি অস্বীকার করেছে জার্মান ফুটবল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফবি)। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আনা বর্ণবৈষম্য ও অসম্মানের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ডিএফবি জানায়, ওজিল যে অভিযোগ এনেছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। জার্মানিতে বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই। অসম্মান তো দূরের কথা। এখানে সব ধর্ম, বর্ণের মানুষ সহাবস্থানে থাকে। সবাই প্রাপ্য সম্মান পান। আমরা মানব ধর্মে বিশ্বাসী।
ওজিলের প্রতি সহানুভূতিও দেখিয়েছে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, তার ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে সে জন্য আমরা অনুতপ্ত। তাকে সহানুভূতি দেখানো ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ খোলা নেই। তবে সে যে অভিযোগ করেছে তা প্রত্যাখ্যান করছি।
রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে গত মে মাসে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। সেখানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ পান ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের তুর্কি বংশোদ্ভূত দুই জার্মান ফুটবলার মেসুত ওজিল ও ইলখাই গুন্ডোয়ান। দু’জনে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছবিও তোলেন। যে ঘটনার জেরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয় পুরো জার্মানিতে।
ওজিলরা জার্মানির হয়ে খেলতে নেমে এই ঘটনার জন্য প্রচণ্ড কটূক্তিও শুনতে হয় তাদের। গুন্ডোয়ান বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেও ওজিল মুখ খোলেননি।
এতে করে দিন দিন ঝামেলা আরও বাড়ছিলো। বিশ্বকাপে ওজিলকে দলে না নিতে কোচ জোয়াকিম লোর প্রতি অনুরোধ জানান জার্মানদের একাংশ। তবু তাকে দলভুক্ত করেন কোচ। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়ায় ফের রোষানলে পড়েন আর্সেনালের ২৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। একপর্যায়ে মৃত্যুর হুমকি পান। শেষ পর্যন্ত তা সহ্য করতে না পেরে একরাশ ক্ষোভ নিয়ে রবিবার (২২ জুলাই) রাতে জানিয়ে দিলেন জার্মানির হয়ে আর কোনও দিন মাঠে নামবেন না তিনি।
বিদায়বেলায় ওজিলের অভিযোগ, মুসলমান হওয়ার কারণেই নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে তাকে। যখন-তখন বর্ণবৈষম্য ও অসম্মানের শিকার হতে হয়েছে। তা থেকে মুক্তি পেতেই জার্মানি জাতীয় ফুটবল দল থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি।
টুইটারে পোস্ট করা এক দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, জার্মান ফুটবল সংস্থা তার সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে, তার পরে সে দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
এ ছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্বকাপে জার্মানির অপ্রত্যাশিত হারের জন্যও তাকেই দায়ী করা হয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘দল জিতলে আমি জার্মান আর দল হারলে আমি অনুপ্রবেশকারী। বারবার আমাকে এই কথা শুনতে হয়েছে।’