নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০১৮: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের দুর্নীতি জাতির সামনে তুলে ধরায় বিএনপির অর্ন্তজ্বালা শুরু হয়ে গেছে। বিএনপির দুর্নীতির কাহিনী রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে বলেই তিনি সত্যকে মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন।
কাদের বলেন, বিএনপির দুর্নীতির বিষয়ে হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছেন। আর তাই তাদের অর্ন্তজ্বালা শুরু হয়ে গেছে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেল স্ট্রেশনের পশ্চিম গেইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড.আবদুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও উপ-দপ্তর সম্পাক মিরাজ হোসেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারের দুর্নীতির কথা বলেছেন দেশী বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে। তিনি সংসদের মাধ্যমে জাতিকে তা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সুইডেনে বসে বিএনপির এক নেতা ঢাকায় কিলার গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে। দেশের সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে দেশের জনগনকে তা আমি জানিয়েছি। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার সেটা দায়িত্ব।
কাদের বলেন, জিয়া পরিবারের দুর্নীতির বিষয়ে দেশী বিদেশী পত্রিকা এবং টেলিভিশনে সৌদি আরব, কাতার, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় শপিং মল ও রোস্তোঁরাসহ বিভিন্ন খাতে অর্থপাচারের মাধ্যমে বিএনপি যে বিনিয়োগ করেছে সে তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশী ও বিদেশী পত্রিকা ও টেলিভিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংসদের মাধ্যমে দেশের মানুষকে তা জানিয়েছেন। আর তাই বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে।
পদ্মা সেতুর নকশা নিয়ে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মাসেতুর নকশায় ভুল প্রমাণ করতে না পারলে বিএনপি নেতাকে মামলার মুখোমুখী হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘ পদ্মা সেতুর ডিজাইনে ভুল রয়েছে বলে মির্জা ফখরুল দাবী করেছেন। আপনি এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করুন। তা নাহলে আপনাকে আদালত যেয়ে মামলা মোকাবেলা করতে হবে।’
জঙ্গি দমন বিষয়ে কাদের বলেন, জঙ্গি দমনে সক্ষমতার দিক থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমসাময়িক বিশ্বের জন্য রোল মডেল। তাঁরা যেভাবে জঙ্গি দমন করেছে সত্যি দেশের জন্য তা প্রশংসনীয়।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা জঙ্গিবাদের কাছে পরাজয় স্বীকার করিনি। তাদেরকে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা দমন করেছে। আজকে ঘটনায় তা আবারো প্রমাণ হলো।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল শীতার্ত মানুষের পাশে দাড়ায় নি। তারা দেশের শীতার্ত মানুষের মধ্যে এককোটি কম্বল বিতরণ করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিভিশনের স্ক্রলে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতার্ত মানুষের কষ্ঠ দেখে তাৎক্ষনিকভাবে তাদের পাশে দাড়ানোর জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
কাদের বলেন, আমরা দলের সম্পাদক মন্ডলীর সভা বাতিল করে শীতার্ত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। শীতবস্ত্র বিতরনের পাশাপাশি আমরা তাদের মধ্যে দলীয়ভাবে নগদ টাকাও বিতরণ করেছি।
বিএনপিকে ইংগিত করে তিনি বলেন, তাঁরা(বিএনপি) শীতার্তদের পাশে দাড়ায়নি। তারা হাওরের মানুষের পাশে যেমন দাড়ায়নি তেমনি বন্যার্তদের পাশেও দাড়ায়নি। আর তাঁরা লোক দেখাতে একদিনের জন্য দূর্গত এলাকায় গেলেও শুধু ফটোসেশন আর সরকারের বিরুদ্ধে বিষোধাগার ছাড়া আর কিছুই করেনি।
তিনি আরো বলেন, তাঁরা (বিএনপি) মানুষের দু:খ-দুর্দশা নিয়ে রাজনীতি করে। বিএনপি কখনো মানুষের কষ্ঠ লাঘবের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। শুধু মানুষের কষ্ঠকে পুঁজি করেই রাজনীতি করতে চায়।
পরে ওবায়দুল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৫তম জম্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত স্বামী বিবেকানন্দ-‘সম্প্রীতি ও শান্তি ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
পরিষদের সভাপতি ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশন ও রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ ধ্রুবেশানন্দ মহারাজ। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য(শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ, সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.এএসএম মাকসুদ কামাল ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.অসীম সরকার।